নিজস্ব প্রতিবেদক:
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে আজ কক্সবাজার আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পাঁচ বছর পর কক্সবাজারে বিএনপি প্রধানের এ সফরকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। আগামীকাল সোমবার তিনি উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করবেন। আজ রোববার সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে খালেদা জিয়ার রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মহাসড়কে পথে পথে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার হারবাং থেকে কক্সাবাজার শহর পর্যন্ত নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছে। বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
আগামীকাল সোমবার সকাল ১১টায় উখিয়ায় বালুখালি পানবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প, বালুখালি-২, হাকিমপাড়া ও শফি উল্লাহকাটা ঢালা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করবেন খালেদা জিয়া। ওই দিন বিকেলে কক্সবাজার হয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে তার রাত্রি যাপন করার কথা রয়েছে। এদিকে তার সফরসূচি সফল ও তদারকি করতে শুক্রবারই কক্সবাজারে এসেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানঁ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও জাতীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সাথে রয়েছেন মির্জা ফখরুলসহ এক ডজন কেন্দ্রীয় নেতা। মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খাঁন কক্সবাজারে এসে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের সাথে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসে সবকিছু তদারকী করছেন। শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল লংবীচ এর লবিতে প্রেসব্রিফিংয়ে মুখোমুখি হন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি রোহিঙ্গাদের মাঝে আমরা রাজনীতি করতে আসিনি। তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখতে ও ত্রাণ সহায়তা দিতে এসেছি। ৩ বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন আজ কক্সবাজারে পৌছবেন।
আগামীকাল সকালে সড়কপথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করতে যাবেন। তিনি বেগম জিয়ার সফরসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন সর্বাত্মক সহযোগিতার। আশা করি সবাই এগিয়ে আসবেন। জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে ১১০ টন চাউল, প্রসূতি মা ও শিশুদের মাঝে খাদ্যসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করবেন। তিনি গতকাল বিএনপি চেয়ারপাসনের পরিদর্শন স্থল ও ত্রাণ বিতরণের সম্ভাব্য এলাকা দেখে বলেন, আগের চেয়ে অনেক শৃংখলা ও সীমাবদ্ধতা ফিরে এসেছে। এজন্য তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আওয়ামীলীগের সামলোচনা করে বলেন, বিএনপি শুরু থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় ও সহযোগিতা করে আসছে। আর আওয়ামীলীগ লুটপাট ছাড়া কিছুই করেনি। বিএনপির দপ্তর সূত্র আরো জানায়, ইতিমধ্যে জেলা বিএনপি ১৪ টি সাংগঠনিক ইউনিট গঠন করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে গত বৃহস্পতিবার বিকালে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ পৌরসভা, বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়নের বিএনপি-অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বেগম জিয়ার সফর উপলক্ষে ৬টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলো হলো- অভ্যর্থনা উপ-কমিটি, শৃঙ্খলা উপ-কমিটি, আপ্যায়ন উপ-কমিটি, অর্থ উপ-কমিটি, মিডিয়া উপ-কমিটি এবং ত্রাণ উপ-কমিটি। জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা কমিটিগুলোর তত্ত্বাবধান করবেন। সভায় চকরিয়ার উত্তর হারবাং থেকে শুরু করে জেলা প্রতিটি এলাকায় ও কক্সবাজার সার্কিট হাউজ এলাকা পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যাপক সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলার ১৪টি সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, খালেদা জিয়া উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে ত্রাণ বিতরণ করবেন। দলীয় চেয়ারপারসনকে জেলায় অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ম্যাডামের কক্সবাজার আগমন উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চেয়ারপারসনের আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব ইউনিটের নেতাকর্মীরা রাস্তায় ফেস্টুন ও প্লে-কার্ড নিয়ে চেয়ারপারসকে অভ্যর্থনা জানাবে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি