২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৩:১৩

তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ফিরছে বিএনপি : মওদুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে গত এক বছর ধরে সোচ্চার বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এখন থেকে তারা আর এই দাবি করবেন না। বরং ২০১৪ সালে যে দাবিতে তারা নির্বাচন বর্জন করেছিলেন, সেই তত্ত্বাবধায়কের দাবিতেই ফিরে যাবেন। শনিবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ এই কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন তিনি।

মওদুদ বলেন, তারা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি তুলে আসছেন। কিন্তু এটা নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাই তারা আর সহায়ক সরকারের কথা বলবেন না।

‘এখন থেকে আমরা সহায়ক সরকারের বদলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাব।’

২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব তুল ধরতে করা সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া সর্বপ্রথম নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে সহায়ক সরকারের কথা তুলেন। পরে সময় মতো এই সরকারের রূপরেখা দেয়ার কথাও বলেন তিনি।

এরপর থেকে বিএনপি নেতারা সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে বলে দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে এই সরকার কেমন হবে, সে বিষয়ে দলটি কোনো কিছুই বলেনি।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বাতিল হওয়া নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় বিএনপি ও তার সমমনারা ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। তবে ওই নির্বাচন বানচাল এবং সরকারের এক বছর পূর্তির দিন ডাকা সরকার পতনের আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপি আর সেই দাবি করেনি। আর এই অবস্থায় খালেদা জিয়া সহায়ক সরকারের কথা বলার পর বিএনপি তার পুরনো দাবি ছেড়ে দিয়েছে বলেই রাজনৈতিক অঙ্গনে কথা ছিল।

তবে বিএনপি তার পুরনো দাবিতে ফিরে যাচ্ছে জানিয়ে মওদুদ বলেন, ‘যদি সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর ক্ষমতা প্রয়োগ হবে। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। শুধু তাই নয়, ইসির মাঠ পর্যায়ে লোক নেই। তারা প্রশাসনকে কাজে লাগাবে। আর প্রশাসন মানেই প্রধানমন্ত্রীর আওতা।’

‘তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় বিএনপি। কারণ সহায়কের প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি থাকলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে না। একই সাথে ভোটের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী নামতে হবে।’

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন ‘আজকে ভারত, চীন ও রাশিয়া সমর্থন দিচ্ছে না। অথচ বাংলাদেশে তাদেরকে এত বেশি বিনিয়োগের সুবিধা দিয়েছেন। তাহলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন আদায় করতে পারছেন না কেন?’

‘আগে ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন আদায় করতে হবে। এখানে আমাদের কূটনীতিক ব্যর্থতা আছে। সরকার এই জটিলতা আরো জটিলতর করছে। জাতিসংঘ একটা কিছু করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। এভাবে সংখ্যা বৃদ্ধি আর সময় যেতে থাকলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেমে যাবে রোহিঙ্গারা। তাতে উগ্রপন্থিরা দেশে ঢুকবে। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হবে।’

দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ২৮, ২০১৭ ৬:০২ অপরাহ্ণ