স্পোর্টস ডেস্ক:
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে অনেক আশার বাণী শুনিয়েছিলেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর রঙিন পোশাকে ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন শুরুর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা। কিন্তু সংস্করণ বদলালেও ভাগ্য বদলায়নি বাংলাদেশের।
টেস্টের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও হোয়াইটওয়াশের তিক্ত অভিজ্ঞতায় আশার বেলুনটা একেবারেই চুপসে গেছে। গোটা দলেরই এখন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুঃস্বপ্নের সিরিজটা শেষ হলেই যেন বাঁচে সবাই! ভুলে যাওয়ার মতো এই সফরের শেষটা কী রাঙিয়ে রাখতে পারবে বাংলাদেশ? হেরে চলা একটি দলকে উজ্জীবিত করার কঠিন পরীক্ষাটা এবার দিতে হবে সাকিব আল হাসানকে। দুই ম্যাচের টি ২০ সিরিজের নেতৃত্বের ব্যাটন যে তার হাতেই। ব্লমফন্টেইনের মানগুয়াংওভালে আজ প্রথম টি ২০তে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
সফরে প্রথমবারের মতো নৈশালোকে ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলবে দু’দল। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হবে ম্যাচ। এই ম্যাচ দিয়েই নেতৃত্বের পুনরাভিষেক হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নতুন টি ২০ অধিনায়ক সাকিবের।
গত এপ্রিলে শ্রীলংকা সিরিজ দিয়ে টি ২০ থেকে অবসর নেন মাশরাফি। এরপর টি ২০ দলের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের হাতে। অভিজ্ঞতাটা অবশ্য তার জন্য নতুন নয়। অতীতে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। তবে টি ২০তে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতাটা সুখকর নয় তার। আগের মেয়াদে সাকিবের অধিনায়কত্বে খেলা চারটি টি ২০-র সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
এবার শুরুতেই সাকিবের সামনে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়া এক সফরে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পাওয়ার অগ্নিপরীক্ষায় উতরাতে হলে অধিনায়কের মতো পুরো দলকেই দারুণ কিছু করে দেখাতে হবে। তাত্ত্বিকভাবে ক্রিকেটের ক্ষুদে ফরম্যাটে ছোট-বড় দলে তেমন ব্যবধান না থাকলেও বাংলাদেশ এখনও টি ২০-র ভাষা ঠিক রপ্ত করতে পারেনি। এ বছর এই ফরম্যাটে পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের চারটি টি ২০-র সবগুলোতেই হার। তার ওপর চোট কেড়ে নিয়েছে দলের সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমানকে। এত প্রতিকূলতার মধ্যে শুধু সাকিবই পারেন দলকে আলোর পথ দেখাতে। আইপিএল, সিপিএল, বিগব্যাশে খেলার সুবাদে টি ২০-র ভাষাটা তার অন্তত অজানা নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি ২০তে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট ও সবচেয়ে বেশি ক্যাচ সাকিবেরই। সতীর্থরা এগিয়ে এলে দৃঢ়তার পরীক্ষায় উতরে যাওয়াটা তার জন্য অসম্ভব কিছু নয়।
ইনজুরির দরুন দক্ষিণ আফ্রিকা পাচ্ছে না তাদের নিয়মিত অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিকে। টি ২০তে স্বাগতিকদের নেতৃত্ব দেবেন জেপি ডুমিনি। পেস আক্রমণের তরুণ নেতা কাগিসো রাবাদাকে বিশ্রামে রেখে টি ২০তে নতুনদের সুযোগ দিয়েছেন প্রোটিয়া কোচ ওটিস গিবসন। তবে ব্যাটিংয়ে ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা, ডি কক ও ডেভিড মিলারের মতো সব মারণাস্ত্রই ব্যবহার করবেন গিবসন। বাংলাদেশ অবশ্য শ্রীলংকার কাছ থেকে প্রেরণা খুঁজতে পারে। এ বছরই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ২-১ ব্যবধানে টি ২০ সিরিজ জিতেছিল শ্রীলংকা। লংকানরা পারলে বাংলাদেশ কেন নয়!
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ