আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং শ্রদ্ধেয় রাজাদের একজন ছিলেন রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজ। যেদিন তিনি প্রয়াত হলেন সেদিন লাখ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন ব্যাংককের থাই রাজপ্রাসাদের কাছে।
ব্যাংককে সেই রাজ প্রাসাদের ধারেই গত এক বছর ধরে তৈরি করা হচ্ছে তার মরদেহ দাহ করার চিতা। তাতে খচিত থাকছে নানা কারুকার্য, থাইল্যান্ডের পৌরাণিক কাহিনীর নানা চরিত্রের মূর্তি। নানা প্রাণীর প্রতিকৃতি। রূপকথার কাহিনীতে যেমন বর্ণনা থাকে ঠিক তেমন। বিশাল চিতাটি বানানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন অগণিত স্থপতি, প্রকৌশলী, কারুশিল্পী। বহু সাধারণ নাগরিকও তাতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শ্রম দিয়েছেন।
তেমনি একজন বলেন, “গত এক বছর ধরে আমি এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছি। এই পুরো সময় জুড়ে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী যেভাবে এর অংশ হওয়ার জন্য এসেছেন, কাজ করেছেন, তা চিন্তা করলে এখনো আমার অদ্ভুত ভালো লাগার অনুভূতি হয়”
গত বছরের ১৩ অক্টোবর ৮৮ বছর বয়সে মারা যান রাজা ভূমিবল। পুরো থাইল্যান্ড জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা, পর্যটন কেন্দ্র বা রাস্তার ধারে এখনো শোভা পাচ্ছে রাজা ভূমিবলের বিশাল বিশাল সব পোর্টেট। তাকে দাহ করার চিতাটি তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেক্ট পর্নথুম থুমভিবল। তিনি বলছিলেন “এই প্রকল্পটি আমাদের রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি প্রচেষ্টা। সেটি অবশ্যই তার মতোই রাজকীয় হতে হবে। সেটিই ছিল আমাদের প্রয়াস। রাজকীয় এই চিতাটির আশপাশের জায়গা প্রতীকী অর্থে স্বর্গ। তার আশপাশে নানা মূর্তি বা কারুকার্য দিয়ে আমরা রাজার জীবদ্দশায় সম্পন্ন করা গুরুত্বপূর্ণ কাজকে বর্ণনা করেছি”।
প্রাসপসুক রাতমাই কাজ করছেন প্রধান ভাস্কর্য শিল্পী হিসেবে। তিনি বলেন, “ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে সবকিছু একদম নিখুঁত হতে হবে। আমাদের প্রত্যেক ধাপে ধাপে, সব খুঁটিনাটি বিষয়ে গভীর মনোযোগ দিতে হয়। এখানে সকল প্রাণীর মূর্তিগুলো পবিত্র হিসেবে বিবেচিত। চিতার প্রথম ধাপে সেগুলো রয়েছে। পশ্চিম দিকে রয়েছে ঘোড়া, উত্তরদিকে হাতি, দক্ষিণে গরু, এরকম। প্রতিটি অংশের পেছনে ধর্মীয় গল্প বা বিশ্বাস জড়িত”।
এই সৎকার অনুষ্ঠানের যেসব আচার, ধর্মীও গান ও নাচ থাকবে সেগুলোও বেশ কিছুদিন ধরে অনুশীলন করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাজা ভূমিবলের সৎকার অনুষ্ঠানে কয়েক লাখ থাই জনগণতো আসবেই, ইতিমধ্যেই বিশ্বের নানা দেশের পর্যটকদের মধ্যেও এই শেষকৃত্যের বিশাল আয়োজন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ