আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দমন অভিযানের কারণে দেরিতে হলেও মিয়ানমারের প্রতি কঠিন অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমিত পরিসরে কাজ করা এবং দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য সব রকম সেনা সরঞ্জামাদি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চলমান নিষেধাজ্ঞাসহ, জবাবদিহিতা এবং সহিংসতা বন্ধের গুরুত্বপূর্ণ ৭টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের বর্তমান ও সাবেক সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের জন্য ‘জেড’ অ্যাক্ট ভ্রমণ শিথিলতার সম্ভাবনা বন্ধ।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধের উপায়গুলো নিয়ে ভাবতে ‘জেড’ অ্যাক্টের অধীনে সুযোগগুলো খতিয়ে দেখা।‘লেহি আইন’ অনুযায়ী মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের সামরিক কর্মকাণ্ডে যেসব কর্মকর্তা ও ইউনিট জড়িত তাদের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য হবে না। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ সহায়তায় কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারবে না। এ জন্যে এরই মধ্যে দেয়া সব ধরনের আমন্ত্রণ বাতিল করা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে প্রয়োজনীয় এলাকায় অবাধে প্রবেশাধিকার দেওয়ার আহ্বান। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের বন্ধু সহযোগিদের সঙ্গে জাতিসংঘ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ও অন্যান্য যথাযথ অবস্থানে বার্মার জবাবদিহিতার বিষয়ে আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কির নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা পদ্ধতি খুঁজে বের করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে মিয়ানমার অর্ধশতাব্দীর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে একটি উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার দিকে এগুতে শুরু করেছে। মার্কিন সরকার এই উত্তরণ এবং নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে সমর্থন করে। যার গুরুত্ব রয়েছে বার্মার সকল জনগণের এবং যুক্তরাষ্ট্র-বার্মার অংশীদারিত্বের স্বার্থে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত ঘটনাগুলোর জন্য রোহিঙ্গারা অমানসিক নির্যাতন সহ্য করছে। যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আবারও নৃশংসতার শিকার হলে দোষীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, মিয়ানমারের গণতন্ত্রের উত্তরণে সমর্থন অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যের বর্তমান সংকট সমাধানে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। মিয়ানমার সরকার ও তাদের সামরিক বাহিনীকে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি