২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:২৩

মানবাধিকার লঙ্ঘনে মিয়ানমারের কাছে জবাবদিহিতা যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহিতার আওতায় এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট এ সম্পর্কে  বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বার্মা একটি অর্ধশতাব্দীর কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি উন্মুক্ত ও গণতান্ত্রিক সমাজের উল্লেখযোগ্য অগ্রযাত্রার দিকে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এই উত্তরণ এবং নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে সমর্থন করে যার গুরুত্ব রয়েছে বার্মার সকল জনগণের এবং যুক্তরাষ্ট্র-বার্মার অংশীদারিত্বের স্বার্থে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধি অর্জনে।
একই সঙ্গে, আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত ঘটনাগুলোর জন্য এবং সহিংস এবং মানসিক নির্যাতন যা রোহিঙ্গা এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ সহ্য করেছে।  যে যেকোনো ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এবং পাহারা দেয়ায় নিযুক্ত সদস্যসহ, নৃশংসতার জন্য কেউ দায়ী হলে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা অপরিহার্য। তদনুসারে, বার্মিজ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমাদের সীমিত পরিসরে কাজ করা এবং দীর্ঘকালীন সময়ের জন্য সকল রকম সেনা সরঞ্জামাদি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে চলমান নিষেধাজ্ঞাসহ, জবাবদিহিতা এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
গত ২৫শে অগাস্ট থেকে বর্তমান ও সাবেক বার্মিজ সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের জন্য ‘জেড’ অ্যাক্ট ভ্রমণ শিথিলতার সম্ভাবনা আমরা বন্ধ করেছি। সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অবরোধের উপায়গুলো নিয়ে ভাবতে ‘জেড’ অ্যাক্টের অধীনে সুযোগগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। ‘লেহি আইন’ অনুসারে, আমরা মনে করি বার্মার উত্তরে রাখাইন রাজ্যের সামরিক কর্মকাণ্ডে যেসব কর্মকর্তা ও ইউনিট জড়িত তাদের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রাপ্ত কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য হবে না।
বার্মিজ নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ যেন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রাপ্ত কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করতে না পারেন সেজন্য আমরা তাদেরকে ইতোমধ্যে প্রদত্ত আমন্ত্রণ বাতিল করেছি। আমরা আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে মিলে আহ্বান জানাচ্ছি বার্মা যেন জাতিসঙ্ঘের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন’ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে প্রয়োজনীয় এলাকায় অবাধ প্রবেশাধিকার দেয়। আমরা আমাদের বন্ধু ও সহযোগীদের সঙ্গে জাতিসংঘ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ও অন্যান্য যথাযথ অবস্থানে বার্মার জবাবদিহিতার বিষয়ে আলোচনা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনে আমরা জবাবদিহিতার পদ্ধতি খুঁজে দেখছি, যার মধ্যে রয়েছে গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কির নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা।
আমরা বার্মার গণতন্ত্রের উত্তরণে সমর্থন অব্যাহত রাখবো, পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে বর্তমান সংকট সমাধানে কাজ করে যাবো। বার্মা সরকার ও তাদের সামরিক বাহিনীকে, অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। যে গোষ্ঠীগুলো খুবই প্রয়োজনে আছে তাদের মানবিক সহায়তা পোঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। যারা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসেছে অথবা বাস্তুহারা হয়েছে তাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে সহযোগিতা করা ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এই পদ্ধতিগত বৈষম্যের মূল খুঁজে বের করা এবং রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশনের প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ খুঁজে বের করা। আমরা প্রস্তুত এই প্রচেষ্টার সমর্থন দিতে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি
প্রকাশ :অক্টোবর ২৫, ২০১৭ ৩:২৩ অপরাহ্ণ