নিজস্ব প্রতিবেদক:
চিত্রনায়ক শাকিব খানের পর এবার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক বাপ্পরাজের কাছে নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। পরিচালক সমিতিকে হেয় করে একটি পত্রিকায় বা্প্পারাজ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন- এরকম অভিযোগ উঠার পর ১৪ মে পরিচালক সমিতি থেকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার।
কেন বাপ্পারাজের সদস্যপদ বাতিল করা হবে না পত্রপ্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে উল্লেখিত বিষয়ে সমিতি বরাবর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য সেই চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর আগেই ১৩ মে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে প্রযোজকের একটি সমস্যার কারণে তাকেও নোটিশ পাঠানো হয়। তার আগে শাকিব খান ও পরিচালক রনির বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠিয়ে আলোচনার জন্ম দেয় এই চলচ্চিত্র সমিতি। এসব সার্বিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারের সঙ্গে।
বাপ্পারাজকে নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পারি তিনি নোটিশ পেয়ে বলেছেন যে তিনি একভাবে পত্রিকার সাক্ষাৎকারে বলেছেন কিন্তু পত্রিকা ভিন্নভাবে তার কথা ব্যাখ্যা করেছে। তাহলে তিনি কেন তার কোন প্রতিবাদলিপি বা ব্যাখ্যা দেননি? তাই নির্ধারিত সময়ে তার কাছ থেকে আমরা ব্যাখ্যা আশা করছি।’
বিভিন্ন তারকাকে নোটিশ পাঠিয়ে কি চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি সমালোচনার মুখে পড়ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে সভাপতি বলেন, ‘না, আমরা বরং প্রশংসিত হচ্ছি। তারকাদের খামখেয়ালিপনার কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতি বা সমালোচনার মুখে পড়বে তা আমরা হতে দেব না। শিল্পী সমিতির নতুন কমিটি আমাদের এখানে এসে আমাদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে গেছেন। মাহিয়া মাহিকে নোটিশ পাঠানোর পর সে জানিয়েছে সে প্রযোজকের কথামতো শিডিউল সমস্যার সমাধান করবে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির সবাইকে তো শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে হবে। না আসলে হবে না। কোটি টাকা খরচ করে একটি ছবি তৈরি হয়। শিল্পীরা সময় মেনে শুটিং সেটে আসলে ছবির ৩০ শতাংশ খরচ কমে যায়। বর্তমান শিল্পীদের শৃঙ্খলা দেখে নতুন শিল্পীরা শিখতে পারবে। আমাদেরও দোষ আছে। আমরা পরিচালকরা শিল্পীদের অনেক ধরনের ছাড় দিয়ে এসেছি। যা ঠিক হয়নি।’
পরিচালক রনির বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নিলেন- জানতে চাইলে গুলজার বলেন, তাকে নিয়ে কোন টেকনিশিয়ান কাজ করতে আগ্রহী নয়। রংবাজ ছবির প্রযোজক এখন অন্য একজন পরিচালক নিয়ে ছবির কাজ এগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। এতে আমাদের অনাপত্তির কথা জানিয়েছি। এর আগেও এমন অনেক হয়েছে। তখন প্রযোজক ও পরিচালকের মধ্যে কোন ঝামেলা হলে নতুন পরিচালক নিয়ে প্রযোজক কাজ শেষ করেছে। রনি চরম বেয়াদবি করেছে। সে কোন নিয়ম মানেনি। সে ভেবেছে বাইরে থেকে সে ছবির কাজ শেষ করবে। এফডিসির কোন সাহায্য তার আর লাগবে না।’
গণমাধ্যমে শুধ নোটিশের খবরই পাই আমরা অন্য কোন সাফল্যের খবর তাহলে কেন আসে না। এমন প্রশ্নের জবাবে গুলজার বলেন, ‘তারকাদের বিশৃঙ্খলা ও নির্বাচনের খবরে আমাদের সাফল্য ঢাকা পড়ে গেছে। আমরা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে মিটিং করছি দাবি দাওয়া জানাচ্ছি, কথা বলছি। এখন যৌথ প্রযোজনা নিয়ে কাজ করছি। দেশে ঢালাওভাবে যে ছবি আসতো তা এখন বন্ধ হয়েছে। কয়টা ছবি আসবে তার নীতিমালা ঠিক করছি। ছবির বেশিরভাগ টিকেটের টাকা হল মালিকরা পায়। প্রযোজক পায় না। এতে একজন প্রযোজক বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়। একজন প্রযোজক আর দ্বিতীয় ছবিতে টাকা লগ্নী করতে পারে না। মেন্টাল ছবির প্রযোজক বাড়ি গাড়ি বিক্রি করে ছবি তৈরি করিয়েছিল। তিনি এখন লসের মুখে পড়ে নিজেই মেন্টাল হয়ে গেছে। একটি টিকেট বসুন্ধরা সাড়ে চারশো টাকা বিক্রি করে প্রযোজককে দেয় ৪৭ টাকা। তাহলে একজন প্রযোজক কীভাবে আর বাঁচবে? তাই আমরা এখন প্রদর্শন ব্যবস্থা ঠিক করার চেষ্টায় আছি। সরকারের কাছে এসব নিয়ে দাবি জানাচ্ছি। খুব শিগগির হল মালিকদের নিয়ে মিটিং করবো।’
দৈনিক দেশজনতা/এমএইচ