নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ঢাকার জলাবদ্ধতাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রী বলেছেন, ‘জলাবদ্ধতার এই সমস্যা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এই সমস্যা তৈরি হতে যেমন সময় লাগছে, এটা নিরসনেও সময়ের প্রয়োজন। আমরা এ ব্যাপারে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। আশা করছি আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই এ সমস্যা থাকবে না।’
রবিবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘কী কী কারণে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে তা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমরা যেসব সমস্যা চিহ্নিত করছি তা নিরসনে উদ্যোগ নিচ্ছি। যেমন রাজধানীর প্রতিটি খাল ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আমরা সেগুলো সংস্কার করবো। যে এলাকার খালের পুন:খনন করা হবে সে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে কাজগুলো করা হবে। এবং তাদেরই এগুলো মেইনটেনেন্সের দায়িত্ব দেয়া হবে। যাতে খালে বর্জ্য না ফেলতে তারা এলাকাবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকার জনসংখ্যা হওয়া উচিত ছিল পঁচাত্তর লাখ থেকে এক কোটি। অথচ সেখানে এই সংখ্যা তিন গুণ বেশি। অপরিকল্পিতভাবে ঢাকা গড়ে ওঠার কারণেই এ সমস্যা।’
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাকে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে ওয়াসা জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করবে। এই সমস্যা নিরসনে আমরা পর্যায়ক্রমে কাজ করছি। জলাবদ্ধতা নিরসন আমাদের করতেই হবে। এটা একটা জাতীয় সমস্যা।’
জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, এ সমন্বয়হীনতা নিরসনেও আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত দুই দিনের বৃষ্টি সরতে সমস্যা হয়েছে। যে ৪৭টি খাল ঢাকায় ছিল তার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা সে খালগুলো পুনরুদ্ধার করবো। পুনরুদ্ধার হলেই খালগুলো আরও গভীর করবো। এবং আগামী বছর থেকে আমরা একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবো। আমাদের সরকার সমস্যাটি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দেখছে। আশা করছি আগামী বর্ষা মৌসুমে এই সমস্যা থাকবে না।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।
এর আগে ‘মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বড় শহরগুলোর জন্য মেডিকেল বর্জ্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় এক হাজার সাতশ বিশেষায়িত ও সাধারণ হাসপাতাল, ক্লিনিক, মেডিকেল কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এ মেডিকেল বর্জ্য মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপদজনক। আমরা এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ করছি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বায়োসেফটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ একটি স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন একটি স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ।’ সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. ওসমান গনি। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেকও উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ