নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর মুগদা থানার মান্ডার মদিনাবাগে জিরানী খালে পড়ে নিখোঁজ হওয়া শিশু হৃদয়ের লাশ ছয়দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার বেলা সোয়া ২টার দিকে যে স্থানে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল সে স্থান থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তার লাশ উদ্ধার করেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করার পর পরিবারের কাছে হৃদয়ের লাশ হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর বিকালে হৃদয় পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়।
জানা গেছে, হৃদয়ের বাবা কামাল হোসেন রিকশা চালক। হৃদয়ের মায়ের নাম রোজি বেগম। তারা ওই খালের পাড়েই টংঘরে ভাড়া থাকেন। তাদের ঘরটিতে যেতে ১৫-২০ হাত লম্বা একটি বাঁশের সাঁকো পার হতে হয়। গত ১৫ অক্টোবর বিকালে হৃদয় ও তার বোন সাথী বাড়ির সামনে খেলা করছিল। এসময় ছোট ভাই হৃদয় পানি খেতে চায়। পাঁচ বছরের সাথী তাকে হাত ধরে পানি খাওয়ানোর জন্য ঘরের দিকে রওনা হয়। সাঁকোটি পার হতে গিয়ে শিশু হৃদয় ওই খালে পড়ে যায়। এসময় সাথীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু এর আগেই ময়লার নিচে পানিতে তলিয়ে যায় হৃদয়। ওই দিন সন্ধ্যা থেকে তাকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এরপর নিয়মিত অভিযান চালালেও গত ৬ দিনে শিশুটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। শনিবার দুপুরে ডুবুরি সাকোর নিচেই কাদার মধ্যে গেড়ে যাওয়া অবস্থায় তার লাশটি খুঁজে পায়।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, খালের গভীরতা অনেক বেশি হওয়ায় এবং ওপরে ময়লা-আবর্জনায় পুরু স্তরের সৃষ্টি হওয়ায় উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হয়েছে। এজন্য শিশু হৃদয়কে উদ্ধারে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। ডুবুরিসহ ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী ইউনিট সাতদিন চেষ্টা চালিয়ে শনিবার দুপুরে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর হৃদয়ের লাশ মুগদা থানা-পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুগদা থানা পুলিশ জানায়, শিশুটি যে খালে পড়ে গেছে সে খালটি দিয়ে আশপাশের নোংরা স্যুয়ারেজ লাইনের পানি ভেসে আসে। তাই শিশুটিকে উদ্ধার করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেক চেষ্টার পর শিশু হৃদয়ের লাশ পাওয়া যায়। পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
দৈনিক দেশজনতা /এনএইচ