নিজস্ব প্রতিবেদক:
কয়েক মাস ধরে নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজার বেসামাল। কখনো চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা, কখনো বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ১০০ টাকা। বাড়তি এ দাম শুধু কাঁচামরিচ বা চালেই নয়। গত কয়েক মাসে দাম বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপণ্যের। আর গতকালও সেই বেশি দামেই স্থিতিশীল ছিল বাজার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাল ও কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি।
বর্তমান বাজারে সাধারণ মানুষের এখনো অস্বস্তি রয়ে গেছে চালসহ সব ধরনের সবজিতে। দাম বেড়ে চলছে পেঁয়াজের। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পটোল, ঝিঙা, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, বেগুনসহ প্রায় সবকটি সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। তবে দুই দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, এধারা অব্যাহত থাকলে আবার সবজির দাম বাড়তে পারে। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট ও আজিমপুর কাঁচাবাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে মিনিকেট চাল ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নিম্ন আয়ের মানুষের মোটা চালও কিনতে হচ্ছে পঞ্চাশের কোটায়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়, ঢেঁড়স ৫৫-৬০, বেগুন ৭০-৮০, পটোল ৫৫-৬০, টমেটো ১২০, পেঁপে ২৫-৩০, বরবটি ৭৫-৮০, গাজর ৫৫-৬০, ধনেপাতা ২০০, চিচিঙা ৫৫-৬০, শিম ১৬০-২০, শসা ৪৫-৫০ ও আলু ২০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ও জালি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা (সাইজ অনুযায়ী)। তবে বাজারভেদে এই সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমবেশি রয়েছে।
আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর দেশীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ৫০ টাকা ছিল। এ ছাড়া দেশি রসুন ৮০, আমদানি করা রসুন ৮৫ টাকা এবং আমদানি করা আদা ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ এবং আমদানি করা ডাল ৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। কিছু কিছু শীতকালীল সবজি বাজারে এসেছে। তবে পুরোপুরি সব সবজি এখনো বাজারে আসেনি। শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম অনেকটাই কমে যাবে। এদিকে বেশির ভাগ সবজির দাম কমলেও বাড়ার তালিকায় নতুন করে স্থান করে নিয়েছে ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজ, শিম ও টমেটো।
রামপুরা অঞ্চলের বাজারগুলোতে সাদা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১২৫-১৩০ টাকা। অর্থাৎ ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকা কেজি দরে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৪০-১৫০ টাকা কেজি। সে হিসাবে লাল লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির সঙ্গে দাম বাড়ার পালে কিছুটা হাওয়া লেগেছে গরুর মাংসেও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫১০-৫২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০০ টাকা। তবে আগের মতোই স্থির আছে খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
রামপুরা বৌবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আব্দুর রহিম বলেন, প্রায় সব সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। সামনে দাম আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দুই দিন ধরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এমন চলতে থাকলে দাম না কমে আবার বেড়ে যাবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ