শিল্প–সাহিত্য ডেস্ক:
বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৭ তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়ীতে তিনদিন ব্যাপী লালন স্মরনোৎসব’র আজ বুধবার রাতে সমাপ্ত হচ্ছে। ‘‘কে তোমার আর যাবে সাথে’ শ্লোগানে সন্ধ্যায় আখবাড়ীর মূল মঞ্চে এই উৎসবের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক, লালন একাডেমির সভাপতি মো: জহির রায়হান, পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী প্রমুখ। উল্লেখ্য, উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক সাধক লালন ফকিরের দেহত্যাগের পর তার অনুসারী ও পরে আখড়া কমিটি আর এখন লালন একাডেমি এই লালন স্মরনোৎসব চালিয়ে আসছে। এবারও তিনব্যাপী এই লালন স্মরনোৎসব শুরু হয়েছে। দেশ বিদেশ থেকে হাজার হাজার লালন অনুসারী, ভক্ত ও দর্শনার্থীরা আখড়াবাড়ীতে জড়ো হয়েছে। লালন স্মরনোৎসব ১৮ অক্টোবর রাতে শেষ হবে।
এ উৎসব উপলক্ষে মরা কালি নদীর তীরে লালন আখড়ায় সমবেত হয়েছেন মরমী সাধক ফকির লালন শাহ’র অসংখ্য ভক্ত অনুসারীরা। লালন আখড়াবাড়িতে বসেছে ভবের হাট। লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে ভক্তরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসেছেন আত্মিক নানা বাসনা নিয়ে। সরল সহজভাবে জীবন অনুসন্ধানের প্রত্যয় নিয়েও এসেছেন অনেকেই। দীর্ঘকাল ধরে তাদের এখানে আসা যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাউল সম্রাটের “মানুষ ভজলে মানুষ হবি, নইলে পরে কূল হারাবি” এ কথার যথার্থতা খুঁজে পেয়েছেন ভক্তরা। সেখানে গুরু-শিষ্যর ভাবের আদান প্রদান যেমন চলছে, তেমনি চলছে জীবনের তিরোধান, ভাব সাধন, আর দেহতত্ত্ব নিয়ে অপূর্ব সূর মূর্চ্ছনা। সাধু-ভক্তদের পাশাপাশি বাউল সম্রাটের মাজারটি টানেও আসছেন ঝাঁক ঝাঁক পর্যটকের দল। আসছেন দেশী-বিদেশী গবেষকগণও। বাউল সম্রাট লালন শাহ’র পুণ্যভুমি কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে এ স্মরোণোৎসব উপলক্ষে বসানো হয়েছে লালন মেলা। যেখানে একতারা, দোতারা থেকে শুরু করে ঘর গৃহস্থালীর নানান জিনিষ পাওয়া যাচ্ছে। বাদ নেই মিষ্টান্ন দ্রব্যও। মরমী সাধক লালনের জীবন কর্ম, জাতহীন মানব দর্শন ও চিন্তা চেতনার আর্দশিক বিষয়গুলো নিয়ে আজ বুধবার পর্যন্ত ৩ দিন চলবে আলোচনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উল্লেখ, ১৮৯০ সালের ১৬ অক্টোবর (পহেলা কার্তিক) লালনের মৃত্যুর পর থেকে তার ভক্তরা এ ধারা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিবছর লালনের মৃত্যু বার্ষিকীতে বাউলভক্ত সাধু-গুরুরা আখড়াবাড়িতে চলে আসে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। তার মৃত্যুর পর থেকে এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সাধু আঙিনায় আসন পেতে বসেছেন লালন অনুসারী বাউলরা।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ