২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ৮:২৮

ভারত থেকে রোহিঙ্গাদের বহিষ্কারের নির্দেশ বহাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

আপাতত রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানো বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করতে চেয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু প্রবল আপত্তি তুলে মোদি সরকার তা আটকে দিল। ফলে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠাতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজ্যগুলোকে যে নির্দেশ দিয়ে রেখেছে, কার্যত তা বহালই থাকছে। ভারত সরকারের ওই সিদ্ধান্ত সংবিধানে দেওয়া মানবাধিকারের বিরুদ্ধে, এই দাবি করে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী ফালি নরিম্যান। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ২১ নভেম্বর থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত শুনানি হবে। তত দিন তিনি রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা আপত্তি তুলে তা আটকে দেন। সুপ্রিম কোর্টে এই নাটকীয় শুনানির পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর উপরে স্থগিতাদেশ জারি করেনি। কোনো অন্তর্বর্তী নির্দেশও জারি হয়নি।’’ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছেন, ‘‘কোনো সাংবিধানিক আদালত নির্দোষ শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ, অসুস্থদের দুরবস্থা দেখেও চোখ বুজে থাকতে পারে না। বৃহত্তর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার। আবার জাতীয় স্বার্থও ফেলনা নয়। দেশের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িয়ে রয়েছে। প্রশ্ন হলো, কী ভাবে ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। এত বড় সমস্যায় রাষ্ট্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’’

এর পরেই প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রের আইনজীবী তুষার মেটাকে বলেন, ‘‘পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত আপনারা কাউকে ফেরত পাঠাবেন না। আমরা নির্দেশে তেমনটাই লিখব। কেউ কোনও অপরাধ করলে ব্যবস্থা নিন, কিন্তু কাউকে ফেরত পাঠাবেন না।’’ অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এতে বলেন, ‘‘আদালতের মুখের কথাই সরকারের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। লিখিত নির্দেশ দিলে, আন্তর্জাতিক স্তরে তার প্রভাব পড়বে। রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে আবেদনকারীরাও এমন আর্জি রাখেছেন না। তেমন পরিস্থিতি হলে তারা ২১ নভেম্বরের আগে আদালতে দরবার করতে পারেন।

প্রধান বিচারপতি তখন জানান, সরকারের সমস্যা তিনি বুঝতে পারছেন। সে ক্ষেত্রে তিনি সরকারকে তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি না করারই নির্দেশ দেবেন। এতেও আপত্তি তোলেন মেটা। যুক্তি দেন, সরকার এমনিতেই নিজের দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন। শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, তিনি নির্দেশ দেবেন যে, তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে আবেদনকারীদের আদালতে আসার স্বাধীনতা দেয়া হলো। এতেও মেটা বলেন, এইটুকুতেও আন্তর্জাতিক স্তরে খবর ছড়িয়ে পড়বে। প্রধান বিচারপতির মৌখিক পর্যবেক্ষণ সরকার শুনছে। সরকার নিজের দায়িত্ব পালন করবে। শেষে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, এই বিষয়টি বিচারাধীন। নরিম্যানের বয়ানও নথিভুক্ত করে বলা হয়, জরুরি পরিস্থিতিতে তিনি আদালতে আসবেন।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ১৪, ২০১৭ ১২:২৪ অপরাহ্ণ