আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোর অভ্যন্তরীণ ‘তদন্ত’ শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট থেকে পরিচালিত ওই অভিযানে সেনা সদস্যরা কোথাও নিয়ম ভেঙেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আয় উইনের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ফেসবুক পেজে শুক্রবার ওই তদন্তের তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে তিনি এটাও বলেছেন, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী সেনাবাহিনীর ওই অভিযান ছিল বৈধ। ফলে সেনা কর্তাদের তদন্তে যে কী ফল মিলবে তা বোঝাই যাচ্ছে। ফেসবুক পেজের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তদন্ত কমিটি জানতে চাইবে, তারা (সেনারা) কি সামরিক বাহিনীর আচরণবিধি মেনে চলেছে? তারা সেনা অভিযানে কমান্ড বা নির্দেশ মেনে চলেছি কিনা। এরপর কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।’
সেনাবাহিনী ওই অভিযান শুরুর পর গত দেড় মাসে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার পাশাপাশি হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের তথ্য জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার সরকার গত অক্টোবরে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘের একটি প্যানেলকে দেশে ঢুকতে দিচ্ছে না। তবে সরকার বা সেনাবাহিনী এর আগেও অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালিয়েছে এবং তাতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো ‘সত্যতা’ পায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই তদন্ত ছিল আইওয়াশ বা ছলনা।
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত হবে বলে দাবি করেছেন। তবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তার কোনো ইচ্ছে আছে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাছাড়া চাইলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। সেনাবাহিনীর ওপর তার নিয়ন্ত্রণ নেই।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন সেনাপ্রধান অং হ্লাইং। চলতি গত সপ্তাহে তিনি মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাসিন্দা নয় এবং শরণার্থী সংখ্যা অতিরঞ্জিত। শুক্রবার জাপানের রাষ্ট্রদূতকে সেনাপ্রধান বলেন, রাখাইনে জাতিগত নিধন চলছে না। ছবিতে তিনি দেখতে পেয়েছেন ‘মুসলিমরা ভয়ে পালাচ্ছে না, শান্তভাবে চলে যাচ্ছে।’
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি