২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ১২:২৪

শীতে ঠাণ্ডার সমস্যা দূর রাখার টিপস

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

শীতকাল মানেই সর্দি, কাশি, গলাব্যথা, জ্বরভাব ইত্যাদি। সত্যিই কী তাই? না, কিছুটা সতর্ক বা পূর্ব প্রস্তুতি নিলে শীতকালটাও আনন্দময় হয়ে উঠতে পারে। শীতের সময় নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য জেনে নিন ১০টি টিপস। এতে আপনি অনেক ঝামেলা থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।

নাক বন্ধ দূর করুন: বড় একটি পাত্রে ফুটন্ত পানি ঢেলে, তাতে ক্যামেলিয়া পাতা বা মেন্থল দিয়ে দিন। তারপর মুখ নিচু করে এবং অবশ্যই খোলা রেখে সেই পানির ভাপ নিন কয়েক মিনিট। পুরো ভাপটি যাতে আপনি ঠিকমতো পান, সেজন্য বড় একটি তোয়ালে দিয়ে মাথা ডেকে নেবেন। দিনে কয়েকবার এই ভাপ নেবেন এবং কিছুক্ষণের জন্য খোলা বাতাসে যাবেন, কেমন?

ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা: অসুখ-বিসুখ করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমে আক্রান্ত হয় শ্বাস ক্রিয়া চলাচলের পথ। তবে সেটা যে সবসময়ই ক্ষতিকর, তা কিন্তু নয়। ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ দেখা দিলে গলা খুসখুস করে, নাক বন্ধ হয়ে থাকে, নষ্ট হয় ঘুম। এর সাথে জ্বর না হলে ঘরে বসে নিজের চিকিৎসা নিজেই করতে পারেন। সবচেয়ে উপকারী বেশি করে হাল্কা গরম পান করা আর বিশ্রাম নেওয়া।

সর্দি, কাশি, গলাব্যথা: সর্দি, কাশি বা সামান্য গলাব্যথা এমন কোনো বড় ব্যপার নয়। তবে একবার ঠাণ্ডা লাগলে, তা সারতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগবেই। কাশির জন্য সকালে এক চামচ আদার রসের তুলনা নেই, তবে সামান্য মধু বা চিনি মিশিয়ে নেবেন। তবে কাশির সঙ্গে যদি জ্বর হয়, তাহলে কিন্তু গুরুত্ব দিতে হবে, অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়াই শ্রেয়।

গায়ে রোদ লাগান: সংক্রমণকে থেকে নিজেকে দূরে রাখতে এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত ফল এবং সবজি খাওয়া উচিত। শরীরের প্রয়োজন ভিটামিন সি, ই, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়াম। এছাড়া ভিটামিন ডি-রও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, কারণ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ঠিক রাখতে চাই যথেষ্ট রোদ। শীত প্রধান দেশে ভিটামিন ডি-র অভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।

ঔষধি গাছের ব্যবহার: ঠাণ্ডা বা সর্দি-কাশি সারাতে ভেষজ ঔষুধ বাঙালির ঘরেই থাকে। এই যেমন আদা বা রসুন। রসুন শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। শীতকালের ঠাণ্ডায় শুধু আদা এবং রসুন বাটা দিয়ে মুরগির স্যুপ খেলে সঙ্গে সঙ্গেই তা ওষুধের কাজ করে, শরীরটা ঝরঝরে লাগে। রসুনকে জার্মানিতে ১৯৮৯ সালে বছরের ‘সেরা ভেষজ উদ্ভিদ’ হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

কমল নয় গমর পানীয়: সর্দি বের হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। কুসুম গরম পানিতে একটু লেবু এবং আদার রস মিশিয়ে পান করলে মুখেও একটু স্বাদ পাওয়া যায় এবং পাশাপাশি লেবু থেকে পাওয়া যায় ভিটামিন সি। এছাড়াও আদা শরীরের ব্যথা কমায়। তাই আদা ও লবঙ্গ দিয়ে পান করতে পারেন ‘গ্রিন টি’ বা পুদিনা পাতার চা।

কাশিতে লবঙ্গের ব্যবহার: কাশি বা গলা খুসখুসে লবঙ্গ বেশ কার্যকর। ছোট্ট একটি লবঙ্গ মুখে কিছক্ষণ রেখে আস্তে আস্তে চেবালে তা রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া লবঙ্গ জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতাও রাখে।

শীতে গরম স্যুপ: মুরগির স্যুপ শীতে অতি উপাদেয়। ঠাণ্ডার মধ্যে আদা এবং রসুন বাটা দিয়ে মুরগির স্যুপ করে খান৷ আগেই তো বললাম, এটা সাথে সাথে ওষুধের মতো কাজ করবে, শরীরে এনে দেবে খানিকটা শক্তিও। তবে মুরগির সাথে গাজর, সালগম ইত্যাদি সবজিও দেওয়া যেতে পারে। পরামর্শ পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়োর্গেন ক্লাউস স্ল্যুইটার-এর।

পোশাকের পূর্ব প্রস্তুতি: শীত আসার আগেই যেমন অনেকে সোয়েটার বোনেন বা কাপড় কেনেন, ঠিক তেমনি শীতের সময় যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তারও প্রস্তুতি নিতে হবে। অন্তত দু-একমাস আগে থেকেই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার, অর্থাৎ যথেষ্ট ফলমূল ও শাক সবজি খেতে হবে। গ্রীষ্মকাল থাকতে থাকতেই শরীর যাতে যথেষ্ট সূর্যের তাপ পায়, সেদিকেও ছোট-বড় সকলেরই খেয়াল রাখতে হবে।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :অক্টোবর ১২, ২০১৭ ১২:১০ অপরাহ্ণ