টেকনাফ প্রতিনিধি:
নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ চ্যানেলে রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও ৯ রোহিঙ্গার লাশ ভেসে উঠেছে। গত দু’দিনে এই ট্রলারডুবিতে মোট ২৩ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হলো। এ নিয়ে গত ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় নৌকা ও ট্রলারডুবিতে নারী-শিশুসহ প্রায় ২০০ রোহিঙ্গার মৃত্যু হলো। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সময় রোববার রাত নয়টার দিকে রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়।
টেকনাফের ২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এসএম আরিফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে সেন্টমার্টিনে একটি লাশ পাওয়া যায়। এর কিছুক্ষণ পরে নাফ নদীর কয়েকটি পয়েন্টে আরও ৮ রোহিঙ্গার লাশ ভেসে ওঠে। লাশগুলোর মধ্যে এক শিশু ও আট নারী রয়েছেন। এছাড়া এই ঘটনায় ১৩ রোহিঙ্গাকে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল দল জীবিত উদ্ধার করেছে। জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে লাশগুলো উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ দাফনের ব্যবস্থা করছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রাখাইনের অন্তত ৩০টি পুলিশ চৌকি ও একটি সেনা ক্যাম্পে আরসা’র যোদ্ধারা প্রবেশের চেষ্টা করে। পরে জঙ্গি দমনের নামে নতুন করে অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনা অভিযান শুরুর পর এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৫ লাখ ১৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ অভিযানে ৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিহতের খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। যদিও মিয়ানমার সরকারের দাবি, নিহতের এ সংখ্যা ৫শ’।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। একই সঙ্গে সংস্থাটি রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী বলে উল্লেখ করেছে। মূলত ২০১২ সাল থেকে রাখাইনে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনা বাহিনীর নির্যাতন বেড়েছে। গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনের মংডুতে এমনই এক সেনা অভিযান ও স্থানীয় উগ্র বৌদ্ধদের হাতে ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি