নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি শামীমসহ সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ৫ অক্টোবর মধ্যরাতে ঘটা অপ্রীতিকর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের ও ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর সম্মেলন কক্ষে রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম শামীম হাসান ও বিপ্লব কুমার দে (শান্ত); পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী তানভির ফয়সাল, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের শির্ক্ষার্থী মো. আল মামুন সিমন ও মো. মাসুদুর রহমান রনি এবং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তানভির আহমেদ তানিন ও আশিক খন্দকার।
এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. নাসিম রেজাকে। আর সদস্যরা হলেন- শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ড. মো. ওমর ফারুক ও বিএনসিসির পরিচালক প্রভাসচন্দ্র রায়। সদস্যসচিব করা হয়েছে সহকারী পরিচালক (প ও উ) ড. আবদুর রউফকে।
কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জড়িতদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ আবুল হোসেন, যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, যবিপ্রবির জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. এ এস এম মুজাহিদুল হক, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. মো. ওমর ফারুক, যশোর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু তোরাব মোহাম্মদ হাসান, যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যবিপ্রবি উপাচার্য ড. আনোয়ার বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন এবং দুঃখজনক। এটা মানা যায় না, গর্হিত অপরাধ।’
তিনি শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করেন এবং তাদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপানের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
যবিপ্রবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে শনিবার দুপুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুব্রত ও তার সহযোগীদের দেওয়া বক্তব্য খ-ন করে সেক্রেটারি শামীম বলেন, সভাপতি গ্রুপের দৌরাত্ম্যে বহু শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসছাড়া। তারা পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারছেন না। এই কারণে তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সহায়তায় ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন। সেখানে তারা কারো ওপর হামলা করেননি, কোনো ধরনের ভাংচুর-লুটপাটও করেননি।
এই সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর পরই শামীম ও তার আরো ছয় সহযোগীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এলো।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ