আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের একটি আদালত জোড়া ধর্ষণ মামলায় তখন সবেমাত্র গুরমিত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সেই খবর আদালতের বাইরে আসতেই তার ভক্তদের তাণ্ডবে মুহূর্তে উত্তাল হয়ে পড়েছিল দেশটির পঞ্চকুলা। এই সংঘাতে নিহত হয় অন্তত ৩৮ জন। ডেরার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল ‘বাবা’র প্রতি ভক্তদের ভালবাসা থেকেই সে দিনের এই বিপুল জনরোষ। গুরমিত গ্রেপ্তারের মাস খানেক পর তার পালিত কন্যা হানিপ্রীত গ্রেপ্তার হওয়ার পর কিন্তু উঠে এল অন্য তথ্য।
পুলিশের দাবি, সে দিনের তাণ্ডব শুধুই ‘বাবা’র প্রতি ভক্তদের প্রেম ছিল না। এর মধ্যে লুকিয়ে ছিল টাকার-খেলা। পুলিশের অভিযোগ, পালক পিতাকে বাঁচানোর জন্য সংঘাত ছড়াতে হানিপ্রীত কোটি টাকা খরচ করেছিলেন। ডেরার অ্যাকাউন্ট থেকে খোদ রাম রহিমের নির্দেশেই সেই টাকা এসেছিল। রাম রহিমের গাড়ির চালক তথা ব্যক্তিগত সহায়ক রাকেশ কুমারকে জেরার পর এই চাঞ্চল্যকর তথ্যটি সামনে এসেছে বলে দাবি করেন পঞ্চকুলার পুলিশ কমিশনার এ এস চাওলা। ৩৮ দিন পালিয়ে বেড়ানোর পর গত ৩ অক্টোবর হানিপ্রীত পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। টাকা দিয়ে সংঘাত ছড়ানোর প্রশ্নে তিনি সন্তোষজনক উত্তর দিচ্ছেন না বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করছিল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে সহযোগিতা না করায় তার নার্কো (সত্য উদঘাটন) পরীক্ষার আবেদন করা হতে পারে।
হানিপ্রীত গ্রেপ্তারের দিন কয়েক আগে রাম রহিমের গাড়ির চালক রাকেশ কুমার গ্রেপ্তার হন। জোড়া ধর্ষণ মামলার শুনানি চলাকালীন গুরমিত এবং হানিপ্রীত দু’জনকেই এই রাকেশ সঙ্গ দিতেন। তিনি গত ২৬ আগস্ট গুরমিতের সাজা ঘোষণার পর দিনই রোহতক থেকে হানিপ্রীতকে সিরসায় সরিয়ে নিয়ে আসেন। তারপরও রাকেশ হানিপ্রীতকে পুলিশের চোখে ধুলো দিতে সাহায্য করেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাকেশ গ্রেপ্তার হন। তাকে জেরা করে পুলিশ হানিপ্রীত সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারে।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, পুলিশের জেরায় রাকেশ জানিয়েছেন, সেদিন সংঘাত ছড়ানোর জন্য ডেরা পঞ্চকুলা শাখার প্রধান চমকৌর সিংয়ের হাতে হানিপ্রীত সোয়া কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে আর বেশি কিছু জানাতে চায়নি পুলিশ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি