২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ২:৩৭

গাইবান্ধায় কৃষকরা দিশেহারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েক একর জমির পাকা ধান। কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সৃষ্টি জলাবদ্ধতায় উপজেলার ইদুলপুর ইউনিয়নের পখর বিল এলাকায় প্রায় সব ক্ষেত এখন পানির নিচে থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ওই ইউনিয়নের একবারপুর গ্রামের কৃষক সাহেব আলী (৫০) জানান, একদিকে বৈশাখী ঝড়ে মৌ ঝরে যাওয়ায় এবার ধানে চিতা হয়েছে বেশি । অন্যদিকে, আবার সেই ধান কাটার আগে জমাট বাধা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারে প্রতি মণ কাঁচা ধান বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকায়। বর্তমানে একজন শ্রমিককে দৈনিক মজুরী দিতে হয় ৪০০ টাকা। তাও আবার তারা পানির মধ্যে ধান কাটতে চাননা। এক্ষেত্রে তাদের দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরী দিতে হয়।

ওই এলাকার দিনমজুর আইয়ুব আলী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে পখর বিলে জমে থাকা পানি দূষিত হয়েছে। ওই পানিতে রয়েছে রক্তচোষা জোঁক। পখর বিলের ধান কাটতে হলে ১০ মিনিট পর পর পানি থেকে উচু জায়গায় উঠে এসে শরীরে কেরোসিন তেল মালিশ করতে হয়। অনেক সময় এসব কিছুই কুলায়না। জোঁক দংশন করলে শরীর থেকে রক্ত ঝড়া শুরু হয়। তাছাড়াও পানি দূষিত হওয়ায় শরীর চুলকায়। এমন অবস্থা দাঁড়ায়, পরের দিন আর কাজ করা সম্ভব হয়না। এসব কারণে দৈনিক মজুরী একটু বেশি নিতে হয়।

একই গ্রামের কৃষক আজিম উদ্দিন জানান, তিনি বিলের প্রায় ১ একর জমিতে ধানের আবাদ করছেন। কিন্তু ধান কাটার আগেই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। কোন রকমে পানির উপরে হাবুডুবু খাচ্ছে ধানের শীষ। সম্প্রতি প্রচণ্ড গরমে পানিতে ডুবে থাকা ধান পচন ধরেছে। কৃষকদের অভিযোগ, এমনিতেই নিচু জায়গা পখর বিল। তারই উপর বিভিন্ন স্থানের ইটভাটার মালিকরা পখর বিল থেকে মাটি তোলায় ধানের জমিতে আরো বেশি পানি জমে থাকছে। ফলে একরের পর একর জমি পানিতে ডুবছে। জমির ধানের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় ওই এলাকার কৃষকের ঘরে সারা বছরের খাবারের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।স্থানীয় কৃষক শাহাজুল ইসলাম জানান, এমন পরিস্থিতিতে ২ জন শ্রমিকের পক্ষে পানির মধ্যে দিনে তিন শতক জমির ধান কাটা অত্যন্ত কষ্টকর। ফলন বিপর্যয় ঘটায় ৩ শতকে ধান হবে ঊর্ধ্বে ১ মণ থেকে ১ মণ ১৫ কেজি । যার বাজার মূল্য গড়ে ১ হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে ১ মণ ধান ও শ্রমিকের দৈনিক মজুরি প্রায় সমান সমান।

n/h =ddj

প্রকাশ :মে ১৪, ২০১৭ ৭:৪৪ অপরাহ্ণ