২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:২৩

ভিয়েতনামের খাটো জাতের হাইব্রিড নারিকেল চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ের কবল থেকে গাছ ও নারিকেল রক্ষায় ঝালকাঠিতে ভিয়েতনামের খাটো জাতের সিয়াম ব্লু নারিকেল গাছের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। নারিকেল গাছের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মাল্টা, লাউ, করল্লা, দুন্দল ও শষার। এসব ফসলের কান্দিতে রয়েছে মাছের অভায়রন্য। ‘এশা ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচার’ নামে মিশ্র খামার করে বেকারত্ব গুছিয়েছেন মাহাফুজুর রহমান।

এদিকে ঝালকাঠিতে ভিয়েতনামের খাটো জাতের সিয়াম ব্লু নারিকেল গাছের খামার পরিদর্শন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও কৃষি অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। শনিবার যুগ্ম সচিব ফরিদা জাহানের নেতৃত্বে কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেশাইন খান গ্রামে কৃষক মো. মাহাফুজুর রহমানের মিশ্র খামারে যান। এ সময় খামারটি ঘুরে দেখেন তারা। নারিকেল গাছের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে মাল্টা, লাউ, করল্লা, দুন্দল, শষা ও কান্দিতে মাছের চাষ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কৃষক মাহাফুজুর রহমান একর জমিতে গড়ে তুলেছেন এই মিশ্র খামারটি। ছয় মাস আগে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ভিয়েতনামের খাটো জাতের সিয়াম ব্লু ১৮০টি নারিকেল গাছের চারা কিনে রোপন করেন তিনি। বন্যা ও ঝড়ো হাওয়ায় এই নারিক গাছের কোনো ক্ষতি হবে না। চারা রোপণের তিন বছরের মধ্যে ছোট অবস্থাতেই গাছে নারিকেল পাওয়া যাবে।

খামারটির খোঁজখবর নিতে আছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফরিদা জাহান, কৃষি অধিদপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওমর আলী শেখ, ঝালকাঠি কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো. আবু বকর সিদ্দিক, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুস শুক্কুর মোল্লা।

কৃষি মন্ত্রীর নির্দেশে খামারটি পরিদর্শন করার কথা জানিয়েছেন যুগ্ম সচিব ফরিদা জাহান। এদিকে প্রতিদিনই অসংখ্য বেকার যুবক খামরটি দেখতে বেশাইন খান গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন। তারা খামারের মালিক মাহাফুজুর রহমানের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এই ধরনের মিশ্র খামার করার পরিকল্পনা করছেন।

শ্রমিক আনসার আলী জানায়, এই নারিকেল খামারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন পাঁচজন শ্রমিক। তারা এ খামারে কাজ করে পরিবার নিয়ে ভালো ভাবে চলছে।

কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে নারিকেল গাছের পাশাপাশি চাষ করছেন সাথী ফসল মাল্টা, লাউ, করল্লা, দুন্দল ও শষার। আর এসব ফসলের কান্দিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অভায়রন্য। মাহফুজের মিশ্র খামারটি দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লাউ, করল্লা, দুন্দল ও শষা বিক্রি করে এ খামার থেকে ইতোমধ্যেই সপ্তাহে দশ হাজার টাকা আয় হচ্ছে মাহফুজের। তিন বছর পরে তার এ খামারের নারিকেল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যাবে। ঝালকাঠির সদর কৃষি কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চাষীকে নারিকেল গাছের চারা সরবরাহ ও সর্বাত্তোক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

মিশ্র এই খামারটি এক সময় দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের নারিকেল ও সবজির চাহিদা মেটানো যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ আবু বকর ছিদ্দিক।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :অক্টোবর ১, ২০১৭ ২:০৩ অপরাহ্ণ