নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে দুর্গাপূজা আর আশুরার ছুটিতে হাজারো পর্যটকের আগমনে মুখরিত সাগরকন্যা কুয়াকাটা। খালি নেই হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ। দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটনমুখী দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। আর তা সামলাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানীরা। পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়েছে চর্তুমুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে কুয়কাটার আবাসন সংকট, খাবার এবং পণ্যের উচ্চমূল্য রাখাসহ বীচের নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেক পর্যটক।
প্রকৃতির নিপুণ হাতে সাজানো সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। সী-বিচের ১৮ কি.মি. দীর্ঘ উপকূল জুড়ে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। ফলে একঘেয়ে ক্লান্ত জীবনে একটু বৈচিত্র্য আনার জন্য পরিবার পরিজনের সাথে অবসার বা ছুটির সময় অনন্দে কাটাতে অনেকেই ছুটে আসেন এখানে। দীর্ঘযাত্রা পথের ক্লান্তি উপেক্ষা করে সুবিশাল বেলাভূমি জুড়ে প্রকৃতির সাথে অপার আনন্দে মেতে উঠেছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা।
কখনো ক্লান্ত অবসান্ন দেহটি সমুদ্রের নোনা জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে করছেন শীতল। সৈকতের বেলাভূমির স্বাচ্ছন্দ্যময় নির্মল পরিবেশে একই স্থানে দাঁড়িয়ে অবলোকন করেন ভোরের সূর্যোদয় আর বেলা শেষে সূর্যাস্ত’র দৃশ্য। বাউলিবন, লাল কাকড়ার চর, ফতরার চর, লেম্বুর চর আর উপজাতি রাখাইন সম্প্রদায়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও কৃষ্টি কালচারের সহচার্যে মুগ্ধ অনেক পর্যটক।
প্রথমবারের মত কুয়াকাটায় বেড়াতে এসেছেন রাজশাহীর সিগ্ধা রহমান। তিনি বলেন, আসার আগে অনেকেই বলেছে কুয়াকাটা বীচ খুব ছোট। এখানে দেখার কিছু নেই। কিন্তু এখানে এসে ধারনা পাল্টে গেল। কক্সবাজারের চেয়েও অনেক প্রসস্ত আর দীর্ঘ বীচ। প্রকৃতির ছোঁয়া এখানে অনেক বেশি।
নিজের মান ও পছন্দানুযায়ী হোটেল না পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে খুলনার খালিশপুর থেকে আসা সোনিয়া রহমান বলেন, মান অনুযায়ী হোটেল পেলাম না। যে হোটেলে উঠেছি সেখানেও দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
নাটোর থেকে আসা আজমালুল হক বলেন, কুয়াকাটার প্রাকৃতিক পরিবেশে আমরা সত্যিই মুগ্ধ। বছরে দুই বার এখানে আসি। কিন্তু কুয়কাটার উন্নয়নে তেমন ছোঁয়া নেই। সব জায়গায় অব্যবস্থাপনা। খাবার হোটেল আর বিপণী বিতান গুলোর অতিরিক্ত মূল্য রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অনেক পর্যটক।
বর্ষা মৌসুমের এ সময়ে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের আগমনে পর্যটনমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রাণ চাঞ্চল্যতায় হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে। গার্মেন্টস ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম সম্রাট বলেন, তিন থেকে চার দিনের ছুটির সময় কুয়কাটায় পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। আমাদের বেচা বিক্রিও ভাল হয়।
কুয়াকাটা শিকদার রিসোর্ট’র জিএম জয়নুল হক চোকদার জানান, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটায় প্রতি বছরই বাড়ছে কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন। তবে পর্যটকদের আগমনের তুলনায় এখানে গড়ে ওঠেনি অবকাঠামো। ফলে থাকার ব্যবস্থা নিয়ে ভ্রমণ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পর্যটকদের। আর এর মূল কারণ হল মাস্টারপ্লান জটিলতা আর কার্যকরী এবং শক্তিশালী বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি না থাকা।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ