নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী বছর থেকেই সব সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রে নেয়া হবে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের তারতম্য দূর করতে এবং উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে পরীক্ষার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বোর্ডগুলো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এক বোর্ডের প্রশ্নফাঁস হলে সবগুলো বোর্ডের পরীক্ষা বাতিল করাসহ নানা বাস্তব সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে প্রায় ১৬ বছর যাবৎ। কিন্তু আগামী ২০১৮ সাল থেকে আবার অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সব বোর্ডের অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গত মঙ্গলবার আন্ত:বোর্ড সমন্বয় উপ-কমিটির সভাপতি হিসেবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চিঠিতে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো বিবেচনায় নিয়ে তা কমানোর ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশনা দেয়া হয়।
আরো জানা গেছে, ২০১৫ সালে বোর্ডভিত্তিক আলাদা প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া শুরু হলে এসএসসিতে বাংলা-ইংরেজিসহ ১২টি বিষয়ের প্রশ্ন আলাদা হতো। কম গুরুত্বপূর্ণ বাকি প্রশ্নপত্র সব বোর্ডে অভিন্নই ছাপানো হতো। এইচএসসিতেও বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞানের চারটি বিষয়সহ যেসব প্রশ্ন ফাঁসের আশঙ্কা বেশি- সেগুলো বোর্ডভিত্তিক আলাদা হতো। এখন অভিন্ন প্রশ্নেই পরীক্ষা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, সারা দেশে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার সুফলই বেশি। আমরা মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পেয়েছি। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নে নেয়া হবে। আমরা এর প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছি। শিগগিরই সব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সমন্বিত বৈঠক ডেকে বাকি কাজও সম্পন্ন করা হবে।
অবশ্য এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভিন্নমতও রয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে রাজধানীর এক কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, বইয়ের সিলেবাস তো সারা দেশে একই। যদি শিক্ষার্থীরা সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা শেষ করে, তাহলে যেভাবেই প্রশ্ন করা হোক, তা পারার কথা। আর উত্তরপত্র আলাদা শিক্ষকেরা মূল্যায়ন করেন। এতে একই মান বজায় থাকবে কি না, তা বলা কঠিন।
এছাড়াও অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হলে দেশের কোনো এক জায়গায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে তা সারা দেশেই ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন কোনো কোনো শিক্ষক।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ