নিজস্ব প্রতিবেদক:
পূর্ব সুন্দরবনের বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের অগ্নিকাণ্ড প্রবন এলাকায় আবারো অবৈধভাবে মাছ ধরা শুরু করেছে চোরা মৎস্য শিকারীরা। একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ওই এলাকার অন্ততঃ ৯টি বিলসহ ছোট খালগুলোতে গত এক সপ্তাহ ধরে মাছ ধরা মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বনসংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই শিকারীরা নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল পেতে বনের কৈ, ষোল, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করছে। বনবিভাগের কিছু অসাধু ব্যক্তি তাদের এই সুযোগ করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে, শুষ্ক মৌসুমে বনে আবারো অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলা সংলগ্ন ধানসাগর স্টেশনের পঁচা কোরালিয়া, তুলাতলা, নাংলী, মূর্তির খাল, মাইডার খাল, নাপিতখালী, ছোট টেংরা, বড় টেংরা ও কলমতেজীর বিল ও বিল সন্নিহিত খালগুলোতে এক সপ্তাহ আগে থেকে মাছ ধরা শুরু হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের বন সংলগ্ন বটতলা, রতিয়া রাজাপুর, পশ্চিম রাজাপুর, বান্দাঘাটা এবং রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর ও দক্ষিণ রাজাপুর এলাকার অর্ধশতাধিক জেলে নামধারী চোরা মৎস্য শিকারী ওই বিল ও খালগুলোতে প্রতিদিন বিকালে মাছ ধরতে প্রবেশ করে। সারা রাত তারা মাছ ধরে ভোর হওয়ার আগেই বন থেকে বেরিয়ে আসে। এসব মাছ ড্রামে ভরে পল্লীমঙ্গল রুট দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে খুলনায় পাঠানো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী চক্র বনবিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় তিন মাসের জন্য বিলগুলো লিজ নেয়। তারা এ তিন মাস কারেন্ট জাল দিয়ে কৈ, ষোল, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির লাখ লাখ টাকার মাছ ধরে থাকে। গত বছর ধানসাগর স্টেশনের বনে কয়েক দফা অগ্নিকাণ্ড ঘটায় ওই অসাধু জেলেরা। এরপর প্রায় এক বছর বন্ধ থাকে মাছ ধরা। কিন্তু এবার আবার মাছ ধরায় সরব হয়ে উঠেছে তারা।
ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) হুমায়ূন কবির বিল লিজ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কেউ যদি বনে প্রবেশ করে মাছ ধরার চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মাহমুদুল হাসান বলেন, সাধারনত শুকনো মৌসুমে ওই এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকে। যদি অগ্নিকাণ্ড প্রবন এলাকায় কেউ মাছ ধরে বা বনবিভাগের কোনো ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে তদন্তে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ