আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গুরমিত রাম রহিমের ধর্ষণ কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই একই ধরনের ঘটনায় এবার আরেক কথিত ধর্মগুরু গ্রেপ্তার হয়েছেন।রাজস্থানের আশ্রমের এই বাবার নাম কুশেলেন্দ্র প্রপান্নাচার্য মহারাজ। শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৭০ বছর বয়সী এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আশ্রমের ২১ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। খবর: এনডিটিভির।
রাজস্থানে ‘ফলাহারি বাবা’ নামে কুশেলেন্দ্র খুবই জনপ্রিয়। তাকে ফলাহারি বলার কারণ তিনি অন্য কোনো খাবার খান। নানা জাতের ফল খেয়ে দিন পার করেন। উচ্চ রক্তচাপের কারণে এই ধর্মগুরু চলতি সপ্তাহে আলওয়ারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে আলওয়ারের সরকারি হাসপাতালের একটি মেডিকেল টেস্টের ফল জব্দ করেছে, যাতে তার সুগার এবং উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক রয়েছে।
আলওয়ারের এএসপি পরাস জেইন বলেন, ‘ফলাহারি বাবার মেডিকেল টেস্টে ইসিজি, সুগার ও উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক পাওয়া গেছে।’ ফলাহারি বাবাকে বিভিন্ন সময়ে দেশটির শীর্ষ রাজনীতিক ও সেলিব্রেটিদের সঙ্গেও ছবিতে দেখা গেছে। ফলাহারি বাবার বিরুদ্ধে যে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন, তার মা-বাবাও এই ধর্মগুরুর ভক্ত।
তরুণীর অভিযোগ, রাজস্থানের আলওয়ারের আশ্রমে গত ৭ আগস্ট তিনি বাবার যৌন নিপীড়নের শিকার হন। এই ধর্মগুরু পর্দার আড়ালে ছাড়া কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না। ঘটনার রাতে কথিত বাবা তাকে আশ্রমের নিজ কক্ষে আসতে বলেন। সেখানে দেখা করার পর রাতে তার ওপর যৌন নিপীড়ন চালানো হয়।
পুলিশকে ওই তরুণী জানান, ধর্ষণের পর বাবা তাকে শাসিয়ে দেন- এ ঘটনা যেন অন্য কেউ না জানে। জানলে খবর আছে। এর আগে একই ধরনের ঘটনায় ডেরা স্বচ্চা সাদের দুই সাধ্বী ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিমের বিরুদ্ধে মুখ খুললে আদালতের রায়ে তার ২০ বছরের জেল হয়েছে।
পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ফলাহারি বাবা ওই তরুণীর বাড়িতেও একাধিকবার গেছেন। আইন বিষয়ে শিক্ষানবিশ ওই তরুণী আশ্রমে অনুদান দিতে গেলে বাবার নজরে পড়েন। এরপর ধর্মগুরু দিল্লির সিনিয়র এক আইনজীবীর অধীনে তার ইন্টার্নশিপ করার কথা বলেন। সেখান থেকে তিনি ৩ হাজার রুপি বৃত্তিও পান।
তবে ওই তরুণীর মা-বাবা বৃত্তির টাকা বাবার আশ্রমে দিতে বলেন। আর সেটি দিতে গিয়েই বাবার কক্ষে অপেক্ষার এক পর্যায়ে এই যৌন নিপীড়নের শিকার হন।
ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরের পুলিশ কর্মকর্তা অর্চনা ঝা বলেন, ‘ওই তরুণী তাদের সবকিছু বলার পর তার মা-বাবা থানায় আসেন এবং একটি মামলা করেন। এরপরই ধর্মগুরুকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ তিনি জানান, এই ধর্মগুরু শুরু ভারতে নয়, বিদেশেও পরিচিত মুখ।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ