দৈনিক দেশজনতা ডেস্ক:
টানা দ্বিতীয়বারের মতো সার্ক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রত্যেক বছরের নভেম্বরে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। গতবারের মত ভারত এবারও সার্ক সম্মেলন নিয়ে তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া সার্কের বিকল্প হিসেবে ইতোমধ্যে ভারত নিজেদের বিমসটেকে সক্রিয় করছে। বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালকে নিয়ে ‘বিবিআইএন’ নামের প্রকল্প দাঁড় করছে দেশটি।
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সার্ক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেন। সেখানে যোগ দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সার্ক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে তার দেশের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দেন। মূলত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের উদ্যোগে গঠিত দক্ষিণ এশীয় এই ফোরামের ওপর।
সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সুষমা স্বরাজ সাফ জানিয়ে দেন, সার্ক তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। উন্মুক্ত বাণিজ্য কিংবা বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি না থাকায় সংস্থাটি তার কার্যকারিতা হারিয়েছে। তিনি সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হবে না এমন প্রসঙ্গ আনেননি। তবে সন্ত্রাসবাদ দমনের ওপরই এই অঞ্চলের আন্তঃরাষ্ট্রের সম্পর্ক নির্ভর করছে বলে ইঙ্গিত দেন সুষমা।
তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক সমৃদ্ধি, যোগাযোগ ও সমন্বয়ই কেবল শান্তি ও নিরাপত্তা আনতে পারে। কিন্তু, এ অঞ্চলে গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে…আমরা সব রকমভাবে সন্ত্রাস দূর করব, এটা এ অঞ্চলের স্থায়িত্বের জন্য প্রয়োজনীয়।’ সার্কের মাধ্যমে ভারতের নেয়া প্রকল্পগুলোর কথাও তুলে ধরেন সুষমা, ‘দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ। চলতি বছরের মে মাসে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়।’
উল্লেখ্য, সার্কের গত আসরের আয়োজক দেশ ছিল পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে গতবার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। পরে ইসলামাবাদ শেষ মুহূর্তে এসে সম্মেলন বাতিল করে।
বর্তমানে সার্কের চেয়ারম্যান নেপাল। দেশটি আগামী বছর সার্ক সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, তাদের এ চেষ্টাও ব্যর্থ হতে পারে। কেন না আগামী বছর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। ওই সময়ে সম্মেলন হলে দেশটি যোগ দিবে না। এদিকে, সার্ককে অকার্যকর করে ভারত বিমসটেকে নিজেদের আরও সক্রিয়ভাবে তুলে ধরছে। কারণ, পাকিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশই এই সংস্থায় রয়েছে।
এছাড়া ভারতের নেতৃত্বে বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল) নামে রেল ও জ্বালানি লেনদেন বিষয়ক একটি বিকল্প সমন্বয় জোটও গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ