স্বাস্থ ডেস্ক:
একবার স্ট্রোকের পর যারা বেঁচে যান তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। তারা পরবর্তী এক বছরের মধ্যে আরও একবার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন। কানাডার চিকিৎসকদের গবেষণায় এমনটি উঠে এসেছে। খবর বিবিসির। গবেষণা প্রতিবেদনটি কানাডার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্ট্রোক বা মিনি স্ট্রোকের কারণে যে ধরনের ঝুঁকির কথা আগে ধারণা করা হতো দীর্ঘস্থায়ী ঝুঁকি তার চেয়ে আরও ভয়াবহ। স্ট্রোকের ঝুঁকি বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি- এমন একটি ধারণা আগে থেকে থাকলেও সেটিও ভুল প্রমাণিত হয়েছে গবেষণায়। কানাডার বিজ্ঞানীরা ২৬ হাজার মানুষের ওপর জরিপ করে গবেষণাটি করেছেন ।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম স্ট্রোক করার পাঁচ বছরের মধ্যে একজন মানুষের এসব ঝুঁকির শঙ্কা বেশি। গবেষকরা বলছেন, স্ট্রোকের অন্যতম কারণ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ধরা হলেও তার চেয়ে বড় আরও অনেক কারণ রয়েছে। মানসিক চাপ থেকে বহু মানুষ স্ট্রোক করছেন।
কখন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হয়?
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক অ্যাটাকের ঘটনা ঘটে সকাল সাড়ে ৬টায়।
কেনো সকাল সাড়ে ৬টায় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হয়?
কিন্তু কেনো নির্ধারিত একটি সময়? সে প্রশ্নের জবাব বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হতে দেখা যায় বেশিরভাগ সকাল সাড়ে ৬টায়। দীর্ঘদিন ধরে এর কারণ জানার চেষ্টা করে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
দীর্ঘদিনের গবেষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, একটি নির্দিষ্ট প্রোটিনের কারণে এমনটি হয়ে থাকে। বোস্টনের ব্রিগহ্যাম এ্যান্ড উইমেনস হসপিটাল এবং অরিগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বলছেন, রক্তে প্লজমিনোজেন অ্যাক্টিভেট-এর ইনহিরিটর ১ (পিএআই১) প্রোটিনের মাত্রা সকালে বেশি থাকে। যে কারণে এটি রক্তের তারল্য বাড়ার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে থাকে। অর্থাৎ রক্ত জমাট বাঁধা রোধের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক যে প্রক্রিয়া রয়েছে, তাতে এটি ব্যাঘাত ঘটায়। সকাল সাড়ে ৬টার সময়
রক্তে এই প্রোটিনের মাত্রা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি থাকে। তাই এ সময়ে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক বেশি হয়ে থাকে বলে বিজ্ঞানীরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বিজ্ঞানীরা ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাস্থ্যবান মানুষের দেহে এই প্রোটিনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে।
বিজ্ঞানী ড. ফ্রাংক শিয়ার গবেষণার পর বলেন, দৈনন্দিন কার্যক্রম কিংবা শুধুমাত্র পরিবেশগত কোনো কারণেই নয়, আমাদের দেহঘড়ির নিয়মেই সকালে রক্তে পিএআই১ প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে থাকে। আর তাই সকালে ওই সময় হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক হতে দেখা যায়।
দৈনিক দেশজনতা /আই সি