আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রায় একশ বছর পেরিয়ে গেছে। যুদ্ধ চলাকালে উত্তর সাগর আর ইংলিশ চ্যানেল পাহারা দিত জার্মান ডুবোজাহাজের ঝাঁক। ওই ধরনের ডুবোজাহাজকে চলতি কথায় জার্মানরা বলত ‘ইউ বোট’। যুদ্ধের সময়ে হারিয়ে যাওয়া সেই রকমই একটি ‘ইউবি টু টাইপ’ জার্মান ডুবোজাহাজের সন্ধান মিলল বেলজিয়াম উপকূলে উত্তর সাগরের তলদেশে।
অবিশ্বাস্য কথা, ওই ডুবোজাহাজে ২৩ জনের দেহ অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানিয়েছে বেলজিয়াম সরকার।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ১৯১৫ থেকে ’১৬ সালের মধ্যে এই ‘ইউ বোট’ আবিষ্কার করেছিল জার্মানরা। সমুদ্রের তলায় প্রায় দেড়শ ফুট নিচে পর্যন্ত যেতে পারত ৮৮ ফুট লম্বা আর ২০ ফুট চওড়া ডুবোজাহাজগুলো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপের বিভিন্ন শহর ঘেঁষে মোট ৯৩টি ‘ইউ বোট’ মোতায়েন করেছিল জার্মানি। যেগুলির সাহায্যে শত্রুপক্ষের প্রায় আড়াই হাজার যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করেছিল তারা। কিন্তু ব্রিটিশদের নেতৃত্বে মিত্রশক্তি পক্ষ শেষমেশ ৭০টি জার্মান ‘ইউ বোট’ ধ্বংস করে। এসময় মারা যান প্রায় ১২০০ জার্মান সেনা।
আবার অন্য একটি সূত্রের দাবি, ১৯১৫ থেকে ’১৮-র মধ্যে বেলজিয়ামের ব্রুজ শহরের ফ্ল্যান্ডার্স নৌবহরে ছিল ১৮টি ‘ইউ বোট’। তার মধ্যেও ১৩টি ধ্বংস হয়ে যায়।
বেলজিয়াম সরকারের সন্দেহ, সম্ভবত এই নৌবহরেরই একটি ডুবোজাহাজের কঙ্কাল এবার পাওয়া গেছে। নিশ্চিত হতে অন্তত আরো একবার জাহাজটির কাছে ডুবুরিদের পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে।
উত্তর সাগরের ঠিক কোন অংশে ওই ‘ইউ বোট’টির খোঁজ মিলেছে, স্পষ্ট করা হয়নি।
বেলজিয়াম সরকার এইটুকুই বলছে, উত্তর সাগরের ৮২ থেকে ৯৮ ফুট তলদেশে ৪৫ ডিগ্রি হেলে পড়ে রয়েছে ওই ডুবোজাহাজ।
ওয়েস্টার্ন ফ্ল্যান্ডার্সের গভর্নর কার্ল ডেকালু সাংবাদিকদের জানান, ডুবোজাহাজটির সামনেটাই শুধু ক্ষতিগ্রস্ত। দু’টি টর্পেডো টিউব ভাঙা। মনে করা হচ্ছে, মাইন ফেটেই সলিলসমাধি ঘটে ইউ-বোটটির। মূল দরজা ছিল ভেতর থেকে বন্ধ। তা ভেঙে ঢুকেই মিলেছে ২৩টি অবিকৃত দেহ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ছিল বলেই সম্ভবত সেগুলি আজও অক্ষত। সূত্র : আনন্দবাজার।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ