নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত মোঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে চরম দুর্ভোগে পড়ে লাখো রোহিঙ্গা। সন্ধ্যার পর থেকে কখনো মাঝারি কখনো ভারি বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অস্থায়ী তাঁবুগুলোয় পানি ঢুকে পড়ে। আবার বাতাসের বেগে অনেক তাঁবু ছিঁড়ে যায়। অনেকে রাতে ঘুমাতে পারেনি। কেউ কেউ তাঁবুতে পানি প্রবেশ না করার জন্য ইট দিয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টির মধ্যে তিন দিন ধরে উখিয়া-টেকনাফ প্রধান সড়কের কুতুপালং থেকে থাংখারী পর্যন্ত পূর্ব পাশ থেকে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। এ সময় বৃষ্টিতে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়। অনেকেই প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সড়কের পূর্ব পাশে বন বিভাগের পাহাড় ও টিলায় দিন যাপন করলেও প্রশাসন তাদের সেখান থেকে সড়কের পশ্চিম পাশে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। যত্রতত্র অস্থায়ী বসতি থেকে তাদের মধ্যে শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে এই ভোগান্তি বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুতুপালং, বালুখালী, ট্যাংখালী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা যত্রতত্রভাবে অস্থায়ী বসতি স্থাপন করেছে। বৃষ্টির কারণে গতকাল এসব এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমেও কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ছাতা নিয়ে আবার বৃষ্টিতে ভিজেও ত্রাণ নিতে গেছে। সড়কের পূর্ব পাশে থাকা বসতিরা তাদের বানানো তাঁবু খুলে বিভিন্ন যানবাহনে করে পশ্চিম পাশে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আবার অস্থায়ী বসতি গড়বে বলে জানা গেছে।
গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কুতুপালং বাজার থেকে বালুখালী বাজার দিকে যাওয়ার পথে দেখা গেছে, বন বিভাগের একটি বাগান থেকে এক রোহিঙ্গা সরকারি গাছ কাটছে। ওই পথে যাওয়ার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম গাড়ি থেকে নেমে সেখানে যান এবং বাধা দেন। সাইফুল ইসলাম লেন, ‘এগুলো বন বিভাগের জায়গা ও গাছ। সরকারি গাছ কেটে ফেলছে। তাই বাধা দিয়েছি। পূর্ব পাশের রোহিঙ্গা অস্থায়ী বসতি সরানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিন দিন ধরে অভিযান চলছে। তাদের (রোহিঙ্গা) সড়কের পশ্চিম পাশে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির কারণে প্রধান ওই সড়কের প্রচুর কাদা। কাদার মধ্যেও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল সড়কে তাদের উপস্থিতি কম ছিল। অনেকে বর্তমান অনুপ্রবেশকারী আশ্রয়শিবিরে ক্যাম্পগুলোয় ঢুকে পড়েছে।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ