নিজস্ব প্রতিবেদক:
সচিবালয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালে চাল ব্যবসায়ীরা কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সভা চলাকালে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাল ব্যবসায়ীরা আলোচনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে বক্তব্য দিতে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সরকার সমর্থিত পক্ষের সভাপতি খোরশদ আলম। এ সময় অপর পক্ষের নেতা আব্দুর রশিদ ও লায়েক আলী খোরশেদ আলমকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, তিনি সরকারের দালাল। তিনি সরকারকে বিভ্রান্ত করছেন। এ পর্যন্ত এক ছটাক চাল সংগ্রহ করতে তিনি সরকারকে সাহায্য করেননি। ফলে তার এখানে সরকারকে সহযোগিতা করার কোনও সুযোগ নেই। আব্দুর রশিদ ও লায়েক আলীর সমর্থক ব্যবসায়ীরা খোরশেদ আলমের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দালালি ছাড়েন, সরকারের গুদামে চাল দেন। এটিই হবে সরকারের বড় সহযোগিতা।’ পরে খোরশেদ আলম আর বক্তব্য দিতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে অটো, মেজর ও হাস্কিং রাইচ মিল আছে ২০ হাজার। এর মধ্যে মাত্র ৪০০ অটো রাইস মিল মালিকদের নেতা সরকার সমর্থিত খোরশেদ আলম। বাকি ১৯ হাজার ৬০০ মিল মারিকদের নেতা আব্দুর রশিদ ও লায়েক আলী। সভার এক পর্যায়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘দেশটা আমাদের। আমরা আপনাদের, আপনারা আমাদের। আসুন আমরা হাতে হাত মিলিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।’
এ সময় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার থেকে সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় খোলা বাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রির কার্যক্রম চালু হবে। তাই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি (১০ টাকা কেজি দরে) সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।’ এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মিলমালিকদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেই চালের বাজারে শৃঙ্খলা ফিরাতে কাজ করবে সরকার। সেই সাথে বাণিজ্যমন্ত্রী চালের দাম কমাতে চাল সংরক্ষণ ও পরিবহনে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও ঘোষণা দেন। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’ অনুযায়ী ধান-চাল পরিবহন ও সংরক্ষণে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
জানা গেছে, বৈঠকে মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা চাল সংরক্ষণ ও পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের বস্তা ব্যবহারের কারণে চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান। কিন্তু প্লাস্টিকের বস্তা অনেক সাশ্রয়ী। প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করলে চালের দাম কমবে। ব্যবসায়ীদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্লাস্টিকের বস্তাসহ ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে খুশি চাল পরিবহন করতে পারবেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি