নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুড়িগ্রামের বাজারে কমছেই না চালের দাম। সরকারিভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে ডিলারদের। চালের দাম বৃদ্ধি আর ডিলারদের কাছে চালের পর্যাপ্ত মজুদ না থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। কুড়িগ্রামে টানা দুই দফা বন্যায় জেলার ৯টি উপজেলার ৬২ইউনিয়নের ৭২৪টি গ্রামের ৫ লাখ ১৭ হাজার ৭৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় এখানকার মানুষদের এখন চড়া মূল্যেই চাল কিনতে হচ্ছে। চালের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় দিনমজুর আর খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গেল ১০দিনে চালের বাজারে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৮ টাকা থেকে ১০টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০টাকা, মিনিকেট ৫৫- ৫৮টাকা, স্বর্ণা ৪৮-৫০ টাকা, আটাশ ৫২-৫৫ টাকা দরে। বস্তা প্রতি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে চাল ব্যবসায়ীরা দুষছেন আমদানিকারকদের। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের দেয়া খোলা বাজারের চাল বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। জেলা শহরে মাত্র ৫টি পয়েন্টে এই চাল বিক্রি হচ্ছে। চাপ বেশি থাকায় সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডিলাররা। জেলার ৯টি উপজেলায় ৬ জন করে সরকারি ডিলার রয়েছে ৫৪ জন। এরমধ্যে খোলা বাজারের চাল বিক্রির জন্য জেলা শহরে ২১ জন ডিলার দেয়া হয়েছে।
জিয়াবাজারের ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী বিপুল জানান, চালের বাজারে অস্থিরতার জন্য আমদানিকারকদের দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এতে করে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি খুচরা ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তারা আরও বলেন, দিনাজপুরের হিলি থেকে ইমপোর্টাররা ভারত থেকে চাল আমদানি করে। আমরা হিলির বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে চাল আমদানি করি। বর্তমানে পয়েন্টগুলোতে চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি। তবে সরকারের ওএমএস চালু হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।
সরকারিভাবে খোলা বাজারে চাল বিক্রির ডিলার হাসান আহমেদ বলেন, দুই দফা বন্যায় ফসলহানি হওয়ায় মানুষ মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বাজারের তুলনায় খোলা বাজারের চালের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এখানে প্রতিদিন বাড়ছে মানুষের ভিড়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে চাল বিক্রি শেষ হয়ে যায়। বেশির ভাগ মানুষ চাল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা শহরের জলিলবিড়ি মোড়, ত্রিমোহনী, দাদামোড়, ভকেশনাল মোড় এবং পৌরসভার সামনে চাল বিক্রি শুরু করেছে। মাত্র এই ৫টি পয়েন্টে খোলা বাজারের চাল বিক্রি করায় মানুষের চাপ বেশি। চাহিদা মোতাবেক সামাল দিতে পারছেনা ডিলাররা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহিবুল হক বলেন, জেলা শহরের জন্য ২১ জন ডিলার পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন ৫ জন করে ডিলার ৫ টন চাল ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। জেলায় সরকারিভাবে ৬ হাজার ৭৫১ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। কোনো সঙ্কট নেই বলে তিনি দাবি করেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ
Daily Deshjanata দেশ ও জনতার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর

