বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
বর্তমানে কমবেশি সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকেন। স্মার্টফোন আসার পর এক সময়ের অপরিহার্য ডিভাইসগুলোর ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। নিউজ পড়া থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সবকিছু্ একটি ভিভাইসেই হয়ে যাচ্ছে। ‘সুপার-স্মার্ট’ হ্যান্ডসেট থাকতে অনেকগুলো ডিভাইন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর কোনো মানেই হয় না।
স্মার্টফোন অন্যান্য অনেক ডিভাইসকেই অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে। এমনকি এসব ডিভাইসের অস্তিত্বকেও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এমন অনেক ডিভাইস রয়েছে স্মার্টফোন আসার পর যেগুলোর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে বলা চলে।
এমপি থ্রি প্লেয়ার : গান শোনার ডিভাইস এমপি থ্রি প্লেয়ারের বাজার দখল করে নিয়েছে স্মার্টফোন। উদারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায় আইপ্যাড ন্যানো বন্ধ হয়ে যাওয়া। সম্প্রতি বাজারে এই ডিভাইসের চাহিদা কমে যাওয়ায় কোম্পানি তা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
আধুনিক যুগে স্মার্টফোনের ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল স্টোরেজে মিউজিক রাখার জন্য প্রচুর জায়গা রয়েছে। আপনি ইচ্ছেমতো গান সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। স্মার্টফোনে থাকা গান শোনার অ্যাপসের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেম : ২৪টি স্যাটেলাইটের সমন্বয়ে সৃষ্ট নেটওয়ার্ককে পৃথিবীর সব জায়গা থেকে ব্যবহারযোগ্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সিস্টেম। মানচিত্র বহনের চেয়ে এই যন্ত্রটির ব্যবহার অনেক উপযোগী বলে এক সময় এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। কিন্তু স্মার্টফোন আসার পর এর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। কারণ মোবাইলের গুগল ও অ্যাপল যেকোনো জায়গা সহজে ও দ্রুত খুঁজে দেবে। সুতরাং অহেতুক আলাদা জিপিএস নেভিগেশন সিস্টেম লোকজন কেনই বা বহন করবে।
ডিজিটাল ক্যামেরা: পকেটে বহনযোগ্য ক্যামেরার ব্যবহার একেবারেই কমে গেছে। স্থিরচিত্র ধারণের ডিভাইসটি ডিএসএলআর’র চেয়ে হালকা। সাধারণত অপেশাদার ফটোগ্রাফাররাই এই ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকেন। স্মার্টফোনের যুগে ক্যামেরা অকেজো হয়ে পড়েছে বিশেষ করে মোবাইলে ‘সেলফি’ আবিষ্কারের পর ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে।
রেডিও: স্মার্টফোনেই রেডিও ফিচার রয়েছে। ১৯৭৪ সালে ক্লাসিক ভিডিও আসার পর রেডিও স্টারের জনপ্রিয়তা কমে যায়। একইভাবে বর্তমানে বলা যায় স্মার্টফোন রেডিওর ব্যবহার বিলুপ্ত করে দিয়েছে। যদিও অনেকে স্মার্টফোনে এখনও রেডিও ফিচার বা অ্যাপস ব্যবহার করেন। তবে রেডিও ডিভাইস বর্তমানে পুরোপুরি বিলুপ্তি হয়ে গেছে।
ভয়েস রেকর্ডার : অধিকাংশ সাংবাদিকই ডিকটেফোনের(কথা রেকর্ড করার যন্ত্র) উপর নির্ভরশীল ছিলেন। সাক্ষাৎকার নেওয়া, নোট তৈরির জন্য ভয়েস রেকর্ড করার জন্য ডিকটেফোন প্রয়োজন। কিন্তু স্মার্টফোনে থাকা ভয়েস রেকর্ডিং অ্যাপ এই ডিভাইসটি সেকেলে হয়ে গেছে। স্মার্টফোনের স্টোরেজে প্রচুর জায়গা রয়েছে। আপনি চাইলেই রেকর্ডিং ফাইল সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনে তা সহজে এডিট করে তাৎক্ষণিক শেয়ার করতে পারেন। এমনকি অনলাইনে সংরক্ষণও করতে পারবেন চাইলে।
অ্যালার্ম ঘড়ি : স্কুল, কলেজ এমনকি চাকরিজীবী সবাই ঘড়ির শব্দে ঘুম থেকে উঠি। এক সময় ওয়াল ঘড়ির চেয়ে ছোট্ট এলার্ম ঘড়ির বেশ চাহিদা ছিল। এলার্ম এখনও চলে তবে ঘড়িটি আর বিছানার পাশে থাকে না। হাতের নাগালে থাকা স্মার্টফোনই এলার্মের কাজটি করে দিচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের প্রিয় গান সেট করে এলার্ম দিয়ে রাখতে পারেন আপনার প্রিয় হ্যান্ডসেটটিতে।
ক্যালকুলেটর: সব ধরনেরই স্মার্টফোনেই ক্যালকুলেটর অ্যাপ থাকে। যেটা দিয়ে সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটরের কাজ নিমেষেই করে দেবে। যদিও স্কুল-কলেজের পরীক্ষায় ছেলেমেয়েরা এখনও ক্যালকুলেটর নিয়ে যায়। কিন্তু গণনার কাজে দিন দিন মোবাইল মোবাইলের উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।
হাত ঘড়ি: হাত ঘড়ি এক সময় বেশ জনপ্রিয় ছিল। বর্তমানে সময় দেখার চেয়ে ফ্যাশনের উদ্দেশ্যেই বেশি হাত ঘড়ি ব্যবহার করতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক সময় জানার জন্য হাতে থাকা স্মার্টফোনের দিকেই নজর রাখা হয়।