২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৩২

অঙ্গ বিক্রি করছেন ইয়েমেনের দরিদ্র জনগণ

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইয়েমের মানুষ দারিদ্রের হাত থেকে মুক্তি পেতে নিজেদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করছেন। কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক বিশেষ প্রতিবেদনে শুক্রবার জানায়, গৃহযুদ্ধে সব হারানো ইয়েমেনের অধিকাংশ মানুষ হয় হুতি বিদ্রোহী দলে যোগ দিতে চাইছে, নচেৎ কাজের আশায় প্রতিবেশি সৌদি আরবে যেতে চাইছে। দু’টির কোনোটির সুযোগ না মিললে মরিয়া হয়ে তারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রিতে আগ্রহ প্রকাশ করছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদককে তারা জানান, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনে কোনো কাজের সুযোগ নেই। অভাবের কারণে সংসারও টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে গেছে। গত দু’বছরে দেশটির অর্থনীতি খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন।

গৃহযুদ্ধের কারণে অফিস আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো কিছুই ঠিক ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অর্থের অভাবের পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসেরও সংকট দেশটিতে এখন ভয়াবহ। যাও বা মিলছে, তা কেনার সাধ্য অনেকেরই নেই।

এমন অবস্থায় বাঁচার জন্য ইয়েমেনের মরিয়া জনগণ নিজেদের কিডনি বিক্রিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। প্রয়োজন হওয়ায় সৌদি ধনাঢ্যরা ইয়েমেন থেকে উচ্চ মূল্যে কিডনি কিনছেন। ফলে প্রচুর অর্থের আশায় কেউ কেউ তাদের কিডনি বিক্রির জন্যে লাইনও দিচ্ছেন।

তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, কিডনি বিক্রির অর্থ দিয়ে তারা প্রতিবেশি কোনো দেশে গিয়ে বাকি জীবনটা সুখে শান্তিতে কাটাতে চান।

ইয়েমেনবাসীর এমন দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণীর দালাল চক্রও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বিক্রেতার ভুয়া চিকিৎসাপত্র এবং পাসপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করে কুয়েত, মিসর কিংবা সৌদি আরবে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। যাতে সেই দেশে গিয়ে অস্ত্রোপচারের কাজটা সম্ভব হয়।

প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানায়, আগ্রহীরা ১০ হাজার ডলারের বিনিময়ে তাদের শরীরের মহামূল্যবান ও প্রয়োজনীয় কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছেন। কখনও কখনও এর দাম আরও কম হয়ে থাকে। তবে অর্থের পাশাপাশি যে সুবিধাটি বিক্রেতা পেয়ে থাকে তা হল, চিকিৎসার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার দেশত্যাগ হয়ে যায়।

অবশ্য সেই স্বপ্ন সবার পূরণ হয়না। অর্থ একসময় ফুরিয়ে যায়, প্রয়োজনীয় অঙ্গ হারানোয় শরীরও একসময় ভেঙ্গে পড়ে। তখন আয়ের জন্য পরিশ্রম করারও উপায় থাকে না।

জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেনের প্রায় ২ কোটি মানুষের অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। সংঘাতের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমেই নাজুক হয়ে পড়েছে। তাদের তথ্যমতে, ২০১৬ সাল থেকে দেশটির স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য খাতের কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না।

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭ ৮:৩১ অপরাহ্ণ