২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৭:১৯

ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ধর্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

শোরীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু, মামলার পাঁচ দিনেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উপজেলা সদরের কামারগাঁ ছাতিয়াগাড়ী গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু, ঘটনাটি ধামাচাপা এবং মামলা তুলে নিয়ে মীমাংসার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মাজেদা বেগম ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ গ্রাম্য মাতব্বররা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না কেউ।

মামলার বিবরণ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ছাতিয়াগাড়ী গ্রামের দিনমজুরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে (১৪) গত ২৫ এপ্রিল সকালে বাড়িতে একাই ছিল। এ সুযোগে একই এলাকার প্রবাসী শামছুর রহমানের ছেলে নাঈম ও এমদাদুলের ছেলে নাহিদুলসহ ৫/৭ জন বখাটে তাকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশে জঙ্গলে ঘেরা ভাঙা বাড়িতে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাটি জানাজানি হলে শামছুরের অর্থের দাপটে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের হস্তক্ষেপে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়। এরপর ধর্ষিতা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।

অবশেষে গত ৭ সেপ্টেম্বর ধর্ষক নাইম ও নাহিদুলকে অভিযুক্ত করে দুপচাঁচিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় ধর্ষিতা কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে মামলা (নং- ৭) দায়ের করেন। এরপর আসামিরা গা ঢাকা দেন। ফলে পুলিশ কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ধর্ষিতা কিশোরীর চাচা বলেন, তার ভাই (ধর্ষিতা পিতা) ক্যান্সারে আক্রান্ত। তিনি গ্রামে গ্রামে ভিক্ষাবৃত্তি করে চিকিৎসা চালান। তাছাড়া ধর্ষিতার মাও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তিনি অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করেন। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই সকাল সকাল কাজে বেড়িয়ে যান। এই সুযোগেই প্রতিবন্ধী মেয়েটির সর্বনাশ করেছে লম্পটরা।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাজেদা বেগম ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুপচাঁচিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, মেয়েটি ২০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। দেরিতে মামলা দায়ের করায় অভিযুক্তরা নাগালের বাইরে চলে গেছে। মামলা তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭ ১২:৩৬ অপরাহ্ণ