মিয়ানমার বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের গণহত্যা সত্ত্বেও দেশটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে চীন। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আগে এমন ঘোষণা দিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী এই সদস্য দেশ। মঙ্গলবার চীন আবারো বলেছে, তারা ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ রক্ষায় মিয়ানমার সরকারের পাশে আছে। খবর: বিবিসি বাংলা।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার তাদের জাতীয় উন্নয়নের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার যে চেষ্টা করছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত তার পাশে থাকা।’রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে- চীন এতে মিয়ানমারের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে ভেটো (বাধা) দেবে। রাশিয়াও একই অবস্থান নিতে পারে।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার রাখাইনে যা ঘটছে তাকে ‘টেক্সটবুক এথনিক ক্লিনজিং অর্থাৎ জাতিগত নিধন অভিযানের যা সংজ্ঞা, হুবহু তাই’ বলে বর্ণনা করেন। এরপরই জাতিসংঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ব্রিটেন এবং সুইডেনের অনুরোধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এতে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি স্থায়ী সদস্য দেশের যেকোনো দেশ কোনো প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ভোট দেয়, তাহলে সেটি আটক যায়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে তা-ই ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ, চীন এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমার সরকারের গৃহীত সব ব্যবস্থাকে শতভাগ সমর্থন জানিয়ে চলেছে। জাতিসংঘের কূটনীতিকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রোহিঙ্গা সংকটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ কোনো মাথা গলাক, সেটা চীন চায় না। নিরাপত্তা পরিষদে গত সপ্তাহে আরেকটি বৈঠকেও চীন মিয়ানমারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
এদিকে নিরাপত্তা পরিষদের আরেক স্থায়ী সদস্য অবশ্য রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে তাদের দীর্ঘ নীরবতা ভেঙেছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সহিংসতার মুখে যেভাবে রোহিঙ্গারা তাদের বাড়িঘর ছাড়া হয়েছে তাতে বোঝা যায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে বেসামরক মানুষকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি