২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ১০:০০

বাজারে উঠতে শুরু করেছে মাগুরার হাজরাপুরী জাতের লিচু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাগুরায় উঠতে শুরু করেছে স্থানীয় হাজরাপুরী জাতের লিচু। মৌসুমের অন্যান্য জাতের তুলনায় আগে পাকার কারণে ব্যাপারীদের কাছে মাগুরার এই জাতের লিচুর কদর অনেক। আগে আগে বাজারজাতকরণ সুবিধার জন্য তারা এই জাতের লিচুর বিক্রি থেকে অধিক মুনাফা পেয়ে থাকেন। এ বছর মাগুরায় উৎপাদিত লিচু থেকে স্থানীয় চাষীরা প্রায় ২০ কোটি টাকার বাণিজ্য করার সুযোগ পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 মাগুরায় সদর উপজেলার ইছাখাদা, হাজরাপুর, নড়িহাটি, রাঘবদাইড়, নন্দলালপুর, খালিমপুর, শিবরামপুরসহ জেলার অন্তত ২০টি গ্রামে লিচুর চাষ হয়ে থাকে। এসব গ্রামে রয়েছে ছোটবড় বিভিন্ন আয়তনের অন্তত ২ হাজার লিচু বাগান। যেখানে স্থানীয় হাজরাপুরী লিচু ছাড়াও মোজাফ্ফরী, চাইনা থ্রি ও বোম্বাই জাতের লিচুর আবাদ হয়ে থাকে। তবে বাগানের অন্তত ৬০ শতাংশে রয়েছে স্থানীয় হাজরাপুরী জাতের লিচু।

মাগুরার ইছাখাদা গ্রামের লিচু চাষী খন্দকার ফারুক আহমেদ জানান, মাগুরার হাজরাপুরী জাতের লিচু মৌসুমের অন্যান্য জাতের চেয়ে অন্তত ১৫ দিন আগে পাকে। যে কারণে সারাদেশের ব্যাপারীদের কাছে এই লিচু অধিক জনপ্রিয়। বাজারে আগে তোলা যায় বলেই তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করে বেশি মুনাফা পাওয়া যায় এই জাতের লিচু বিক্রি করে।

মাগুরার স্থানীয় হাজরাপুরী জাতের লিচু অন্যান্য লিচুর থেকে আকারে কিছুটা ছোট হলেও খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। যে কারণে এই লিচুর কদর সবার কাছেই।

ইছাখাদা গ্রামের কৃষক নয়ন বিশ্বাস জানান, তার তিনশটি লিচু গাছ রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর প্রতিটি গাছেই ভাল ফলন হয়েছে। এরপরও তিনি এক মৌসুমের জন্য ছোট ছোট আরো চারটি লিচুর বাগান কিনেছেন। যেখান থেকে এ বছর তিনি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন।

স্থানীয় নয়ন বিশ্বাস বলেন, লিচুর চাষ অত্যন্ত সহজ এবং ঝুকিমুক্ত। যে কারণে যেকোনো ব্যক্তিই এই চাষ করতে পারে। বাগান পরিচর্যাতেও খুব বেশি পরিশ্রম নেই। অথচ একটু আন্তরিকতা নিয়ে চাষ করলে বছরের এই সময়টাতে মোটা অংকের নগদ টাকা ঘরে তোলা সম্ভব।

মাগুরার লিচুর গ্রামগুলিতে এখন চলছে ভরা মৌসুম। প্রতিটি বাগানেই এখন লিচু ব্যাপারীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক লিচু ব্যবসায়ী এখান থেকে লিচু সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় বাজারে। আর এসব ব্যাপারীদের মাধ্যমে মাগুরার চাষিরা এ বছর অন্তত ২০ কোটি টাকার বাণিজ্য করতে সক্ষম হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, প্রতি বছরই এই জেলার চাষীরা কেবলমাত্র লিচু বিক্রি থেকে অন্তত ১৫ কোটি টাকার বাণিজ্য করে থাকে। এবার ফলন ভাল হওয়ায় বাণিজ্যের পরিমাণ আরো ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

M/H

প্রকাশ :মে ১৩, ২০১৭ ১২:৩৫ অপরাহ্ণ