২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৬:১২

উত্তরাঞ্চলে ফসলের মাঠে সোনালী ধানের দোলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উত্তরাঞ্চলের ফসলের মাঠ জুড়ে এখন সোনালী ধানের দোলা। পাকা ধান দেখে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। বগুড়া জেলাসহ আশেপাশে জেলাগুলোতে অনেকটাই উৎসাহ-উদ্বেপনার মধ্যে দিয়ে ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।

 এবার ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ফলন নিয়ে কৃষকরা ব্যাপক খুশি হলেও দাম নিয়ে বেশ চিন্তিত। কারণ চলতি সপ্তাহে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় হাটে ধানের দর কমেছে। গত সপ্তাহে চিকন জাতের ধান প্রতি মণ সাড়ে ৯ শ টাকা থেকে ১ হাজার ২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর চলতি সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯ শত টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করে।

বৈশাখের কাঠ ফাঁটা উত্তপ্ত রোদ আর কখনো সামান্য বৃষ্টিভেজা রোদের সঙ্গে ক্ষেতের পর ক্ষেত জুড়ে কৃষকদের সোনালী ধান কাটা ও মাড়াই গ্রামীণ বাংলার এক চিরচেনা দৃশ্য। কৃষকের উঠোন ভরে উঠছে নতুন ধানে। ধান কাটা মাড়াই শুরু হওয়ার পর নতুন ধানের নাবান্নের উৎসবের অপেক্ষায় এখন গ্রামাঞ্চলে। আর নতুন ধান ঘরে তুলতে এ অঞ্চলের কৃষকের পাশাপাশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষানিরাও।

কৃষি বিভাগ জানায়, বগুড়ায় এবার ইরি-বোরে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৯২ হাজার ২শত ৪৭ হেক্টর জমিতে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এবার ধানের আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৯২ হেক্টর ৩শত ২০ হেক্টর জমিতে। এতে চালের উৎপাদন হবে প্রায় ৮ লাখ ৪০-৫০ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর চালের উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন। বগুড়া সদর, নন্দীগ্রাম, গাবতলী, শাহজাহানপুর, শেরপুর এলাকায় ধান কাটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকার কৃষক সাজু মিয়া বলেন, ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে, এতে আমরা আনন্দিত। এখন ধান ভালোভাবে ঘরে তুলতে পারলেই হলো। আবহাওয়ার অবস্থা এমন চলতি মাসজুড়ে থাকলে তাহলে চাষীরা মাঠ থেকে ভালোভাবে ধান বাড়িতে নিতে পারবে।

বগুড়া সদর উপজেলার দশটিকা এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হোসেন ও মকবুল হোসেন সরকারের কাছে দাবি করেন, সরকারি ভাবে ধান ক্রয় মূল্য যেন বাড়ানো হয়। তাহলে বাজারে ধানের দাম বাড়বে। তারা লাভের মুখ দেখতে পারবেন।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখান পুকুর এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদীন ও আবুল হোসেন বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে, প্রতি বিঘায় ধান হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ মণ।

কাহালু উপজেলার মুরুইল রাজধানী এলাকার কৃষক জাফরুল ইসলাম বলেন, হাটে নতুন ধান সাড়ে ৭ শ’ টাকা থেকে সাড়ে ৮ শত টাকায় মণ বিক্রি হচ্ছে। সার তেলসহ উৎপাদনের সকল উপকরণের দাম দাম বেশি সেকারণে  উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। তাই ধানের দাম না বাড়লে তাদের লোকসান হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া অঞ্চলের পরিচালক হজরত আলী জানান, এবারও ধানের ফলন যথেষ্ট ভালো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বগুড়ায় এবার ১৮ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

তিনি দাবি করেন, সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হলে বাজারে ধানের দাম আরো বাড়বে।

M/H

প্রকাশ :মে ১৩, ২০১৭ ১২:২১ অপরাহ্ণ