২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:৫৬

দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের বল্লভপুর-আন্দুলিয়া সড়কের বল্লভপুর কমিউনিটি ক্লিনিক মোড় থেকে মাধবপুর তিনমাথা মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের প্রধান রাস্তা। এটি বর্ষায় হাঁটু কাদা ও আর খরায় ধুলোর রাজ্যের সৃষ্টি হয়। চলতি বর্ষা মৌসুমে স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ আপামর জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে এ রাস্তায় যাতায়াত করছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় পাকাকরণের দাবি উঠলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত রয়েছে। অবিলম্বে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বল্লভপুর কমিউনিটি ক্লিনিক মোড় থেকে মসজিদ পর্যন্ত এক’শ মিটারের মত ইটের সোলিং করা হয়েছে। এরপর থেকে কাচা রাস্তা শুরু। এখান থেকে হরিতলা, তোফাজ্জেল হোসেনের পুকুর মোড় হয়ে মাধবপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা কাদায় বেহাল। বর্ষার পানিতে হাঁটু সমান কাদা হয়েছে। কাদার মধ্যে চলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হচ্ছে যাতায়াতকারীরা। রাস্তাটি আন্দুলিয়া থেকে মাধবপুর, বল্লভপুর হয়ে হিজলি মধ্যদিয়ে চৌগাছা উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযুক্ত। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই রাস্তাটি। প্রতিদিন শ’শ মানুষ যাতায়াত করছে ওই সড়কে।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। দক্ষিণ বল্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাকাপুর-বল্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাদার মধ্যে হাটতে গিয়ে পড়ে গিয়ে বাড়ি ফিরছে। প্রায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না।

এছাড়াও পুড়াপাড়া, চৌগাছা বাজারে কৃষি পণ্য নিয়ে যেতে বিপাকে পড়তে হয়। নিয়মিত যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ভিলেজ পলিটিক্সের কারণে পাকাকরণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আগ্রহ কম। এজন্য গ্রামের অলিগরি অন্যসব রাস্তা পাকা ও সোলিং হলেও এই রাস্তাটি বাকি আছে। বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ জহির বলেন, ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দেয় রাস্তা করে দেবে। ভোটে জিতে গেলে আর খবর থাকে না। বর্ষা কাদায় চলাচল করতে খুব কষ্ট হয়। মাধবপুর পাড়ার ছেলে মেয়েদের স্কুলে যেতে বেশি কষ্ট হয়। রাস্তাটি পাকা হলে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ শেষ হতো।

স্কুল ছাত্রী পূজার মা জয়ন্তী রায় বলেন, বর্ষায় কাদার মধ্যে বইয়ের ব্যাগ ঘাড়ে শিশুদের স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। কাদা জলে পড়ে অনেকে ভিজে বাড়ি ফিরে যায়। রাস্তাটি মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। জানতে চাইলে সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোতা মিয়া বলেন, ‘আমার কোনো পরিকল্পনা নেই। শুনছি এমপি সাহেব রাস্তাটি পাকা করবে। তার কাছে খোঁজখবর নিতে পারেন।’

জানতে চাইলে চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল হামিদ বলেন, ‘বল্লভপুরের ওই রাস্তাটি পাকাকরণের কোনো প্রকল্প কিংবা পরিকল্পনা এলজিইডি’র নেই। এখন তদবির ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এমপি সাহেবের বরাদ্দ থেকে যদি উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে রাস্তাটি পাকা হতে পারে।’ জানতে চাইলে যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যতদূর জানি ওই রাস্তার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’ এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য তিনি তার প্রতিনিধি চৌগাছা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়ের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যানকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭ ৩:৩৯ অপরাহ্ণ