২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১২:০৫

বেশি দামে চামড়া কিনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে

যশোর প্রতিনিধি:  

যশোরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কেনায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। গরুর চামড়া প্রতি ২০০-৩০০ টাকা ও ছাগলের চামড়ায় ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। মঙ্গলবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার হাট যশোরের রাজারহাটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানালেন লোকসানের কথা। অপরদিকে পাইকাররা বলছেন, ট্যানারি শিল্প সমিতির নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকায় তারা চামড়া কিনেছেন। পরে ট্যানারি মালিকরা দাম না বাড়ালে বিপদে পড়তে হবে। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে রাজারহাট চামড়ার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাটে তুলনামূলক কম চামড়া সরবরাহ হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার তেমন হাঁকডাক নেই। অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর চোখে মুখে হতাশার ছাপ। পাইকাররা জানান, কোরবানির বেশিরভাগ চামড়া আজকের বাজারে আসেনি। অনেকে বাজার যাচাই করার জন্য অল্প সংখ্যক চামড়া নিয়ে এসেছেন। তবে আগামী শনিবার হাট জমবে বলে আশাবাদী।

যশোর সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রাম থেকে চামড়া বিক্রি করতে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী গোপাল দাস বলেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে গরুর ৪০টি ও ছাগলের ৪০টি চামড়া সংগ্রহ করেছি। প্রত্যেকটি গরুর চামড়া ১৪০০-১৬০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া ১০০-১৫০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু হাটে বিক্রি করতে এসে হতাশ। কেনা দামেও বিক্রি হচ্ছে না। গরুর চামড়ায় ২০০ টাকা আর ছাগলের চামড়ায় ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাধবকাটি গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী প্রফুল্ল দাস বলেন, এবার চামড়া পাচারের কোনো আশঙ্কা নেই। সীমান্তের চামড়া হাটে আসছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার কোরবানি কম হয়েছে। এজন্য হাটে চামড়াও কম।

মাগুরার সীমাখালির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী চাঁন বিশ্বাস বলেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীদের জন্যে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকায় পশুর চামড়া কিনেছি। কিন্তু বাজারে এসে দেখছি তারা নেই। তারা চামড়া সংরক্ষণ করছে। আর আমরা বাজারে এসে ধরা খেয়েছি। চামড়ার দাম কম। কেনা দামের চেয়ে অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়াও লবণের দাম ঈদের পরপরই বেড়েছে। এবার এনজিও থেকে ১ লাখ টাকা লোন নিয়ে চামড়া কিনেছি। বাজারের যে অবস্থা তাতে পুঁজি বাঁচবে বলে মনে হচ্ছে না। যশোরের পাইকারি ব্যবসায়ী মমিনুল মজিদ পলাশ জানান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকায় চামড়া বিক্রি করছে। আমরা বেশি দামে ঝুঁকি নিয়ে কিনছি। ট্যানারি মালিকরা বেশি দাম দিবে কি না সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চেয়ে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

যশোর জেস লেদারের মালিক এম আলী জানান, খুলনার একটি ট্যানারি কারখানা এ অঞ্চলের মসজিদ মাদ্রাসা থেকে সরাসরি প্রায় ২৫ হাজার পিস পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছে। এজন্য আজকের হাটে চামড়া কম এসেছে। যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, ঈদুল আজহা পরবর্তী প্রথম হাটে চামড়া কম উঠেছে। আগামী শনিবার নির্ধারিত দিনে বেশি পরিমাণ চামড়া উঠবে বলে আশা করছি।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৭ ৫:০৪ অপরাহ্ণ