২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১১:০৩

চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে ফড়িয়ারা বিপাকে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:  

চামড়া শিল্পের প্রধান উপকরণ কাঁচা চামড়া। এ কাঁচা চামড়ার সিংহভাগই আসে কোরবানির ঈদে। এ সময় যে চামড়া সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা তাতেই সারা বছর চলে ট্যানারিগুলো। দেশে বর্তমান রফতানি খাতেও ভালো অবস্থানে রয়েছে চামড়া শিল্প। দেশের সম্ভাবনাময় খাতের মধ্যে অন্যতম ধরেই সরকারও বেশ কাজ করছে এ শিল্পের জন্য। এবার সরকারিভাবে প্রতি স্কয়ার ফুট গরুর চামড়ার দর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করলে ব্যবসায়ীরা তা না মেনে স্বল্প দামে ক্রয় করছে। ফলে সাধারণ ফড়িয়ারা বিপাকে পড়েছেন। ফড়িয়াদের অভিযোগ এতে অনেকেরই মূলধন হারাতে হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ শহরের একমাত্র বৃহত্তর চামড়া আড়ৎ নিউ ঢাকা রোডের রেলওয়ে কলোনি চামড়া পট্টি। এ ছাড়াও প্রত্যেক উপজেলাতেই রয়েছে ছোট বড় চামড়ার আড়ৎ। ঈদ ছাড়াও প্রতিদিন এখানে কম-বেশি চামড়া বেচা-কেনা হয়। তবে কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ বেচাকেনা শতগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। সদর উপজেলার আলমপুর গ্রামের ফড়িয়া সোলেমান হোসেন বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রায় ১০০ পিস কোরবানির পশুর চামড়া কিনেছি। প্রতি পিস চামড়ার মূল্য পড়েছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। অথচ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সেগুলোর দাম বলছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। লাভ তো দূরের কথা আসল টাকা খুঁজে পাচ্ছি না।’ কান্দাপাড়া গ্রামের ফড়িয়া আফসের আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ঈদের আগে মিটিং করে সবাই এক হয়ে একটি সিন্ডিকেট করেছে। যার কাছেই চামড়া নিয়ে যাওয়া হয় সবাই একই দাম বলে।’ ‘কাঁচা চামড়া বিক্রি না করতে পারলে এগুলোতে পচন ধরবে। এখন যা পাই, পচে গেলে তাও পাব না। ফড়িয়া আফসারের অভিযোগ ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আমাদের পথে বসিয়ে দিল বলে।’

এদিকে চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ না করায় এবং ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে চাহিদা মাফিক চামড়া অর্ডার না দেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বেশি দামে চামড়া ক্রয় করতে পারছেন না। তাছাড়া লবণের দাম অনেক বেশি বলেও তাদের দাবি। ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে গত বছরের পাওনা টাকা এখনো পরিশোধ না করায় পুঁজি সংকটে রয়েছেন। ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘জেলায় ছোট-বড় শতাধিক ব্যবসায়ী থাকলেও ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে বকেয়া টাকা না পাওয়া বেশি চামড়া কেনা হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ফড়িয়ারা বেশি দামে কিনলে আমাদের কিছুই করার নেই। চাহিদা অনুযায়ীই আমরা চামড়া কিনছি।’ আব্দুর রাজ্জাক নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কোরবানিতে কাঁচা চামড়ার আমদানি বেশি। কাঁচা চামড়ায় লবণ মিশিয়ে রাখতে হয় প্রায় দু’সপ্তাহ। লবণের দাম বেশি এবং সংকট হওয়ায় নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা এবার সম্ভব হচ্ছে না।’

সিরাজগঞ্জ চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক হাসিনুর রহমান হাসি জানান, বাংলাদেশের চামড়া শিল্প বিশ্ব দরবারে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। এ ব্যবসায়ী নেতা দাবি জানালেন চামড়া শিল্পের প্রতি সরকারের সুদৃষ্টি কামনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ সুবিধা ও ট্যানারি মালিকদের দ্রুত বকেয়া পরিশোধের  ।

দৈনিকদেশজনতা/ আই সি

প্রকাশ :সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৭ ২:৩২ অপরাহ্ণ