এম. কে. দোলন বিশ্বাস, জামালপুর :
জামালপুর জেলার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলার ইসলামপর উপজেলার প্রত্যান্ত ডিগ্রিরচর গ্রামে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) অর্ধলক্ষাধিক মুসল্লির অংশ গ্রহণে ঐতিয্যবাহি এ ঈদগাহ মাঠে ৮৪তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে স্থানীয়রাও ছাড়াও অন্যান্য উপজেলার হাজারো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।
জানা যায়, উপজেলা সদরের পূর্ব প্রান্তে উপজেলার চরগোয়ালিনী ইউনিয়নে অবস্থিত জেলার সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দান। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কালের ¯্রােতে ডিগ্রিরচর ঈদগাহ ময়দানটি পরিণত হয়ে উঠেছে একটি ঐতিহাসিক স্থানে। জেলার সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠিত এ ময়দানের বিশাল ঈদের জামাত গৌরবান্বিত ও ঐতিহ্যবাহী করে তুলেছে ইসলামপুর উপজেলাকে।
মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভের আশায় ঈদগাহে সকাল সকাল হাজির হন মুসুল্লিরা। যেখানে এক সঙ্গে লক্ষাধিক মুসুল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। জেলার সবচেয়ে বড় ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ নিতে সকাল থেকেই ছিল মুসুল্লিদের ঢল। সকাল ১০টায় প্রতিবারে মতো ঈদের নামজের ইমামতি করেন জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা জামে মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা এনায়েত উল্লাহ। জেলার এই বৃহত্তম জামাতে অংশ নিতে পেরে শুকরিয়া আদায় করেন মুসুল্লিরা। একই অংশে এতবড় জামাত আয়োজন করাই স্থানীয়দের মাঝে ছিল খুশির আমেজ।
ঈদগা মাঠ সূত্রে জানা গেছে, ডিগ্রিরচর বড় ঈদগা মাঠটি ১৯৩৩ সালে স্থানীয় প্রখ্যাত আলমে-দ্বীন আল্লামা হযরত মফিজ উদ্দিন (রহঃ) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করলে এতে সর্বপ্রথম ৪০ শতাংশ জমি দান করেন হাজি নয়ানদর ব্যাপারী। এরপর দ্বিতীয় বারের মতো ঈদগার নামে ১৯৯২ সালে ১০শতাংশ জমি দান করেন সমাজ সেবক রুস্তম আলী। এসব সমাজহৈতষি ব্যাক্তিরা আজ কেউই বেঁচে নেই। বর্তমান ডিগ্রিরচর বড় ঈদগাহ মাঠের জমির পরিমাণ ৫বিঘা। এই ঈদগাহ মাঠটির চারের তৃতীয়াংশ উচু দেয়ালে ঘেরা। এছাড়া এই মাঠের প্রাচীর দেয়ালে দুইট দরজা রাখা হয়েছে। মাঠে মুসল্লির সংখ্যা প্রতিবছর বেড়ে চলেছে।
ঈদগা মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজি আবু তালেব জানান, প্রখ্যাত আলমে-দ্বীন হযরত মাওলানা মফিজ উদ্দিন ১৯৩৩ সালে ডিগ্রিরচর গ্রামে ঈদের জামাতের আয়োজন করেন। ওই জামাতে ইমামতি করেন তিনি নিজেই।
পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম মাস্টার জানান, ইসলামপর উপজেলার চরপুটিমারী ও চরগোয়ালিনী ইউনিয়নের ৩৬টি গ্রামের মুসল্লিসহ পাশ্ববর্তী মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ও দুরমোঠ ইউনিয়ন এবং শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মুসল্লিরা ঈদের জামায়াতে অংশ গ্রহণ করেন।
পরিচালনা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডাক্তার এনামুল হক জানান, দানকৃত ৫০শতাংশ জমি বাদে বাকি ১শত ৬৫শতাংশ জমি মুসল্লিদের দানের টাকায় ক্রয় করা হয়।
পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী লুৎফর জানান, ঈদগাহ’র ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কার্যনির্বাহী কমিটি রয়েছে। ঈদের নামাজের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কর্মকান্ড এই কমিটি করে থাকে।
ঈদগা মাঠ পরিচালনা কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শামসুজদৌহা সজিব ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লা সরকার যৌথভাবে জানান, আগামীতে মাঠের আয়তন আরও বাড়ানো হবে। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো ধরণের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ