নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ১৭১টি দেশের প্রায় ২৫ লাখের বেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার হজ করছেন, যাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজারের বেশি। বুধবার হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর মক্কার কাবা শরিফ থেকে রওনা হয়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মিনায় জড়ো হন হজ করতে আসা মুসলমানরা। ইবাদত-বন্দেগিতে মিনায় রাত কাটানোর পর আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তারা জিকির করেন, জামায়াতের সঙ্গে নামাজ পড়েন।
হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার জন্য বুধবার এশার নামাজের পর থেকেই তারা মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। সেলাইবিহীন শুভ্র এক কাপড়ে বৃহস্পতিবার সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে থাকবেন তারা। মুসলমানদের কাছে পবিত্র এই ভূমিতে তারা যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে পাপ থেকে মুক্তির আশায় ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং নামাজ পড়বেন। সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শাইখ আরাফাতের মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের খুতবা দেবেন। রেডিও ও টেলিভিশনে তা সম্প্রচার করা হবে বিশ্বময়। প্রায় চার বর্গমাইল আয়তনের সমতল এই ময়দানের দক্ষিণে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।
মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী, আদি পিতা আদম ও আদি মাতা হাওয়ার পৃথিবীতে পুনর্মিলন হয়েছিল এই আরাফাতের ময়দানে। এখানে তারা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এই আরাফাতেই ১৪ শ’ বছরের বেশি সময় আগে ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) তার বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। ইসলামের রীতি অনুযায়ী, জিলহজ মাসের নবম দিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে ইবাদতে কাটানোই হল হজ। আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হবে। আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন মুসলমানরা। মিনায় ফেরার পথে সন্ধ্যায় মুজদালিফায় পড়বেন মাগরিব ও এশার নামাজ। রাতে মুজদালিফায় খোলা মাঠে অবস্থান করার সময় তারা পাথর সংগ্রহ করবেন। ওই পাথর মিনার জামারায় শয়তানকে উদ্দেশ্য করে ছোড়া হবে। শুক্রবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে মিনায় ফিরে জোহরের নামাজ পড়বেন সবাই। পরে শয়তানকে (প্রতীকী) পাথর ছুড়বেন। এরপর কোরবানি দিয়ে হাজিরা ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে ।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি