নিজস্ব প্রতিবেদক:
মিয়ানমার বাহিনীর গণহত্যা থেকে বাঁচতে ভিটেমাটি ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন রোহিঙ্গারা। সীমান্তে কড়া পাহারার ফাঁক গলিয়ে অনেকে ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছেন। কিন্তু এখানে এসে ফের নির্মম বাস্তবতার শিকার তারা। অভিযোগ উঠেছে, জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা স্থানীয় দুর্বৃত্তদের নির্যাতন ও লুটপাটের শিকার হচ্ছেন। রোহিঙ্গা নারীরা এসব দুর্বৃত্তের লালসার শিকারও হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি লুটপাট এবং কয়েকজন রোহিঙ্গা নারীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি সেখানে পাহারা বসিয়েছে।
বিজিবির বান্দরবান ৩৪ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ জানান, দুর্বৃত্তদের হাত থেকে উদ্ধার করে কয়েকজন রোহিঙ্গা নারীকে তাদের স্বজনদের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে। একইভাবে লুট হওয়া ৬৫টি গরু ডাকাতদের কবল থেকে উদ্ধার করে রোহিঙ্গা মালিকদের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছে। মেজর ইকবার জানান, গত দুদিনে লুটপাট হওয়া আরও ১৫২টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত মালিক না পাওয়ায় তা কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের রেজু অঞ্চল বিওপি যাওয়ার পথে একটি স্থানে উদ্ধার হওয়া ২২টি গরু বিকালে পাহারা দিতে দেখা গেছে চার পুলিশ সদস্যকে। এসময় উপ-পরিদর্শক (এসআই) জমির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা লুট হওয়া এই গরুগুলো উদ্ধার করেছি। এখন প্রকৃত মালিক খুঁজে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
চলতি মাসের শুরুতে রাখাইনে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। ঘোষণা দেয় অভিযানের। এরই মধ্যে গ্রামের পর গ্রাম রোহিঙ্গাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর বদলা নিতেই রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ পোস্টে হামলা ও একটি সেনাঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ হয়। খোদ মিয়ানমার সরকারই জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আরাকান রোহিঙ্গা সলভেশন আর্মির (আরসা) আক্রমণের পর শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ‘জঙ্গিবিরোধী অভিযানে’ প্রায় ১০০ মানুষ নিহত হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনের দাবি, নতুন করে আট শতাধিক রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি