নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার বক্তব্য দূরভিসন্ধিমূলক।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সকল রাজনৈতিক দল চাইলেই আগামী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এর দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহার করা হবে। বৃহস্পতিবার সিইসির বক্তব্য সেটির প্রতিধ্বনি বলে বিএনপির কাছে মনে হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান ভোটার বিহীন সরকার বন্দুকের জোরে ক্ষমতা আকড়ে ধরে যে অপকর্ম, দেশজুড়ে যে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম, মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে- এতে করে ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তা এখন শূন্যের নিচে নেমে গেছে। এজন্যই প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা নির্বাচনে ভোট কারচুপির জন্য আবারো ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে এসেছেন কি না সেটি এখন মানুষের মধ্যে বড় ধরনের প্রশ্ন।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য মূলত সরকারের ইচ্ছা পূরণেরই প্রতিফলন। নির্বাচন নিয়ে সরকারের আগ্রাসী ষড়যন্ত্র এখনো সমহিমায় বিরাজমান।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে জার্মানি, আমেরিকা, ভারতসহ অনেক দেশে ইভিএম মেশিন নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় সেখানে এই মেশিনের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জার্মান আদালত ২০০৯ সালে এক রায়ে বলেছে, ইভিএম মেশিন খুব সহজেই টেম্পারিং করা সম্ভব। এতে ভোট পুনর্গণনার সুযোগ নেই। তাই জার্মান আদালত ওই মেশিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। গত কয়েক দিন আগে ভারতে কিভাবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট কারসাজির ঘটনা ঘটেছে সেটি ছবিসহ প্রকাশ করা হয়েছে। তাই বর্তমানে আবারো ইভিএম বিষয়টিকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জনসম্মুখে নিয়ে আসা দূরভিসন্ধিমূলক।
দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। দেশজুড়ে সন্ত্রাস, লুটপাট, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অরাজকতায় এমনিতে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের পুরো সময়ই চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের বাজার ছিল ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষের পকেট কেটে তারা হাজারো কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে সিন্ডিকেট চক্র আরো বেপরোয়া হয়ে গেছে। সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় গত এক সপ্তাহে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন।
তিনি বলেন, চাল, ডাল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ-রসুন, মরিচ, মসলাসহ নিত্য ও ভোগ্যপণ্যের ব্যবসার পেছনে সরকার দলের একেকটি ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, মিল মালিক, আড়তদার সিন্ডিকেট নেপথ্যে সক্রিয় রয়েছে। পবিত্র রমজান মাস ও শবেবরাতকে পুঁজি করে ক্রেতাসাধারণের পকেট কেটে শত শত কোটি টাকা নির্ঘাত হাতিয়ে নেয়ার টার্গেট নিয়ে বাজার কব্জায় নেয়া ও এসব নিত্যপণ্যের নিয়ন্ত্রিত বাজারকে অস্থির করে তুলেছে অতি-মুনাফালোভী চক্রগুলো।
রিজভী বলেন, সরকারের বানিজ্যমন্ত্রী গালভরা বুলি আওড়িয়ে ছিলেন- কোনো পণ্যের দামই বাড়বে না। উনার বক্তব্য যে বাচালতা তা প্রমান হয়েছে। বরং সাধারণ মানুষের পকেট কাটার জন্যই সরকার রমজানের প্রাক্কালে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে তাদের সিন্ডিকেটকে সহায়তা করেছে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ, সংগঠনি সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বুলু, সহ সাংগঠনি সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
M/H