নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি বছর কেবল বাংলাদেশ নয়, নেপাল, ভারতেও বৃষ্টি হচ্ছে অস্বাভাবিক পরিমাণে। বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা বার বন্যায় সড়ক, মহাসড়কে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গত কয়েক দিনের শুকনো আবহাওয়ায় ছিন্নভিন্ন এসব রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে। তবে আবহাওয়া চোখ রাঙাচ্ছে। আবার বৃষ্টি হলে কী হবে, সে নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। এবারো ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষদের ভোগাতে পারে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে। শুক্রবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম জানান, এখন সারাদেশে সামান্য বৃষ্টিপাত হচ্ছে, কিছুক্ষণ রোদ হচ্ছে, আবার অল্প পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। এমন আবহাওয়া চলতে পারে আগামী ২৭ তারিখ পর্যন্ত। তবে ২৯/৩০ তারিখে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। ৩০ তারিখের পর টানা ভারী বর্ষণও হতে পারে। মূলত ২৭ আগস্ট থেকে ঈদযাত্রা শুরু হবে।
টানা বর্ষণের ফলে সারাদেশের মহাসড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অতি দ্রুত খানাখন্দ ঠিক করে সড়কগুলোকে যানচলাচলের উপযোগী রাখতে সড়ক বিভাগের সব কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীর ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে টাঙ্গাইল সড়ক পরিদর্শনকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, বৃষ্টিপাতকে অজুহাত দেখিয়ে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা বিঘ্নিত হবে, এটা আমি বলতে চাই না। যেকোনো অবস্থায় আমরা সড়ক ব্যবহার উপযোগী ও সচল রাখব। এজন্য পুলিশ, পরিহন মালিক ও শ্রমিক সবার সাথে কথা হয়েছে। আমার মনে হয় এবারের ঈদেও মানুষের যাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। বৃষ্টি হলেও চিকিৎসা আছে, বৃষ্টি চলাকালে রাস্তা মেরামতে আমাদের প্রকৌশলীদের মাঠে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সড়কগুলোকে যানচলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা থাকলেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে গেলে গাড়িগুলোর গতি স্লো হয়ে যাবে। এতে দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে মহাসড়কগুলোতে যানজট ততই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সড়কগুলোতে গণপরিবহনের পাশাপাশি কোরবানির পশুবাহী ট্রাক চলাচল করায় যানজটের আকার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সষ্টি হয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ৫৫ কিলোমিটার ও গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল ও কলেজগেট এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের একমাত্র পথ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পুরো রাস্তা জুড়েই খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে পরিবহনগুলো গতি মন্থর হতে থাকে। শুক্রবার ভোর থেকে কয়েক পয়েন্টে থেমে থেমে যানজট হচ্ছে। মহাসড়ক সংস্কার ও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা যায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে যানজটের সূত্রপাত হলেও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ধেরুয়া রেলক্রসিং, গোড়াই বাসস্ট্যান্ড, মির্জাপুর বাইপাস, পাকুল্লা, নাটিয়া পাড়া, করটিয়া, পৌলি ও এলেঙ্গা পয়েন্টে থেমে থেমে জটের মুখে পড়ছে যানবাহন। তবে বৃষ্টিপাত হলে এই রাস্তায় ঈদে ঘরমুখো মানুষগুলো ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছে।
মহাসড়কগুলোতে খানাখন্দের কারণে যাত্রার সময় দীর্ঘ হচ্ছে জানিয়ে শ্যামলী পরিবহনের চালক ছানারুল ইসলাম বলেন, ‘রংপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় খানাখন্দে ভরা। এর ফলে আমাদের যাত্রার সময়ও দীর্ঘ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় গাইবান্ধা থেকে ঢাকা পৌঁছতে বেলা এগারটা বেজেছে। বেশি সময় অপচয় হচ্ছে মহাস্থানগড়, যমুনা সেতুর টোল প্লাজা, টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা পার হতে।’ বৃষ্টি হলে এই দুর্ভোগ আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করেছেন।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি