কক্সবাজার প্রতিনিধি:
রোববার সকাল থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া ও তুমব্রু গ্রামে প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ হচ্ছে। গুলির শব্দে সীমান্ত এলাকা কেঁপে উঠেছে। শত শত রোহিঙ্গা ওই এলাকার মিয়ানমার সীমান্তে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে। মূলত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি কৌশলে এসব রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্ত জনপদের মানুষও এতে করে আতংকে রয়েছে। সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন এর আগে শনিবার বিকেল চারটার দিকে ঘুমধুম সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ভূখন্ডে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শুনা যায়। শত শত রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে ‘নোম্যানস ল্যান্ডে’ অবস্থান নেওয়ায় মিয়ানমার পক্ষ আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সীমান্ত পরিদর্শনে যাওয়া বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মফিদুল আলম জানান শনিবার বেলা ১১টার দিকে সীমান্ত-সংলগ্ন তুমব্রু বাজারের কাছাকাছি এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এক দফা গুলি ছুড়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কর্মকর্তারা বলেছেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কোনো মর্টার শেল পড়েছে কি না, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে এবং ঘুমধুম সীমান্তে এখন হাজারো নারী-শিশু জড়ো হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল চারটার দিকে ঘুমধুম সীমান্তে ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়া বাজার ও উত্তর ঢেঁকিবনিয়া এলাকায় প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। গোলাগুলির সময় ঢেঁকিবনিয়ার দিক থেকে শত শত রোহিঙ্গা নারী-শিশু সীমান্তের দিকে চলে আসতে থাকে। রোহিঙ্গারা প্রথমে ঘুমধুম সীমান্ত চৌকি-সংলগ্ন প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ের মৈত্রী সেতু দিয়ে বাংলাদেশ ভূখন্ডে ঢোকার চেষ্টা করলে বিজিবি বাধা দেয়। পরে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা ঢোকার চেষ্টা করে। সীমান্ত-সংলগ্ন তুমব্রু বাজার কমিটির সভাপতি তাহের বলেন, সীমান্তে জড়ো হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের আতঙ্কিত করতে বিজিপি সকালে গুলি ছুড়–ছে। সীমান্ত পরিদর্শনে যাওয়া ম্যাজিস্ট্রেট মফিদুল আলম বলেন, বিজিপির ছোড়া তিনটি গুলি তুমব্রু বাজারে এসে পড়েছে। তবে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি।
বিজিবির ঘুমধুম সীমান্ত চৌকির অধিনায়ক নায়েব সুবেদার রফিকুল ইসলাম বলেন, হাজারো রোহিঙ্গা সীমান্তে জড়ো হয়ে রয়েছে। বিজিবি কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার লে.কর্নেল মো.আনোয়ারুল আযীম বলেন, ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে কিছু সমস্যা হওয়ায় কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা সীমান্তে জড়ো হয়েছে। কিন্তু কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সীমান্তে আরও জনবল বাড়ানো হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বিজিবি।
দৈনিকদেশজনতা/ আই সি