২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সকাল ৬:০৪

উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবার টাকা পাচার হচ্ছে হুন্ডি ও বিকাশে !

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের উখিয়াও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে আসা ইয়াবার বিপরীত বিক্রির কোটি কোটি বাংলা টাকা পাশ্ববর্তীদেশ মিয়ানমারে এবং মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আসা স্বপ্নের টাকা ও হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়ে থাকে। সরকারী এবং বেসরকারী ব্যাংকে লেনদেন ঝুঁকি থাকায় দেশের ভেতরে ও টেকনাফের ইয়াবা গডফাদারেরা দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডিকেই একমাত্র নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আড়ালে হুন্ডি বাণিজ্য করে অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হয়েছে। কিন্তু এর সাথে জড়িত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের আইন শৃংখলা বাহিনী চিন্থিত করলেও অনেকেই এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। জানা যায়, প্রতিদিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনে সরকারের নজরদারী থাকায় টেকনাফের চিন্থিত ইয়াবা গডফাদাররা দীর্ঘদিন ধরে হুন্ডির মাধ্যমেই কোটি কোটি টাকার লেনদেন করে যাচ্ছে। সেই সাথে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের মাধ্যমে ও ব্যবহার করছে ইয়াবা কারবারিরা। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা ও স্বপ্নের টাকা হুন্ডি এবং মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হয়েছেন, হ্নীলা টেকনাফ পৌর শহর, সাবরাং ও শাহপরীরদ্বীপের ব্যবসায়ীরা,টেকনাফের হ্নীলা, টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নসহ টেকনাফ পৌর এলাকায় বেঙের ছাতার ন্যায় গজে উঠেছে। পাশাপাশি উখিয়ার প্রায় জনলোকারণ্য শহর এলাকা ছাড়াও পালংখালী, বটতলী, থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, সোনার পাড়া, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, ভালুকিয়া, হলদিয়ার পাতাবাড়ি, পাগলির বিল, রুমখা পালং, ঘুমধুমের বেতবুনিয়া, তুমব্র“ বাজার ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজাহা এ দুই ধর্মীয় উৎসবের প্রাককালে অবৈধ লেনদেন বেশী হয়ে থাকে। এছাড়া ইয়াবার বদৌলতে যারা রাতারাতি কালো টাকার পাহাড় বনে গেছেন, তাদের লেনদেন বেশির ভাগ হুন্ডি এবং বিকাশ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয়ে থাকে। অপরদিকে টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তের এবং মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বেশীরভাগ কর্মজীবি মানুষ মধ্যপ্রাচ্য দুবাই মালয়েশিয়া সৌদি আরব, কাতার, কোয়েত, সিংগাপুর, ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্নদেশে কর্মজীবনে থাকেন। তাদের আয়ের বেশীরভাগ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে চলে আসে। বিশেষ করে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে কোন ব্যাংক প্রতিষ্ঠান নেই। তাদের একমাত্র অর্থ লেনদেনের মাধ্যম একমাত্র হুন্ডি। যা টেকনাফ সীমান্ত ব্যতীত অন্য কোন স্থান নেই। গোটা আরাকান রাজ্যের প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ টেকনাফ সীমান্তের হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। এ ছাড়া অন্য কোন বিকল্প পথ নেই। টেকনাফ সীমান্তের যে, সব জনশ্র“ত এবং তালিকাভূক্ত হুন্ডি ব্যবসায়ী রয়েছে, তার মধ্যে উখিয়ার ডেইল পাড়া গ্রামের মৌলভী ছানা উল্লাহ ছেলে একরাম, একরামের নেতৃত্বে জমাজমাট হুন্ডি ব্যবসা চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তার কারণে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে বসেছে। হ্নীলার মাহবুবুল আলম, আতিক, জয়নাল আবেদীন, নুরুল ইসলাম প্রকাশ বিকাশ ইসলাম, টেকনাফ সদরের ডেইল পাড়ার কালা মোঃ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আমিন। এরা বড় সিমেন্ট ও চাউল ব্যবসার আড়ালে মিয়ানমার ভিত্তিক হুন্ডি করে ওরা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। ওরা ইয়াবার বিক্রিত এবং প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ হুন্ডি এবং মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মিয়ানমারে বাংলা টাকা পাচার করে দিচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তালিকা থাকলেও এরা বীরদর্পে এ কালো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচঃ ওরা ধরাছোয়ার বাইরে। তবে এরা এবিষয়ে নাকচ করে দিয়ে শুধু বৈধ ব্যবসার কথা জানান। অনেকের অভিমত, হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করতে পারলে ইয়াবা কারবারীর ব্যবসা অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে। টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ও’সি) মোঃ মাঈনুদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, হুন্ডি ব্যবসা দেশের অর্থনীতির চাকা অচল করে দেয়। তারা দেশ এবং জাতির শত্র“। সুতরাং এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে।উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, হুন্ডি ব্যবসা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। এ বিষয় মাথায় নিয়ে প্রশাসনের একটি টিম গোপনে তৎপর রয়েছে।

দৈনিক দেশজনতা /এন আর

 

প্রকাশ :আগস্ট ২৩, ২০১৭ ৯:৪৫ অপরাহ্ণ