নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেষ দিনেও টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। আজ বুধবার বিক্রি হচ্ছে ১ সেপ্টেম্বরের টিকিট। ঈদের আগের দিন যারা বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুক তারাই এসেছেন টিকিট কাটতে। তবে গতকাল মঙ্গলবার যারা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও ৩১ আগস্টের টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের ভিড়টাই বেশি। ২ সেপ্টেম্বর ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় টিকিট বিক্রির একদিন সময় বাড়িয়েছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবুও টিকিট প্রত্যাশীর কোনো কমতি নেই।
শেষ দিনের মোট পঁচিশ হাজার ১০২ টি টিকিট বিক্রি হলেও পাচ্ছে না অনেকেই। কারণ সকালের দিকেই দেওয়ানগঞ্জ রুটের তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকেট শেষ হয়ে গেছে। ওই ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশী মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এত অল্প সময়ে সব টিকিট বিক্রি হয় কীভাবে। নিশ্চয় এতে ঘাপলা আছে।
মাসুদুর রহমান বেসরকারি একটি ফার্মে চাকরি করেন। অফিস থেকে ৩১ আগস্ট ছুটি নিয়েছিলেন ঈদে একটু আগেই রংপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন বলে। দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় আলাপকালে তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৬ টায় এসেছিলাম ৩১ তারিখের টিকিটের প্রত্যাশায়। কিন্তু ১২ টা বাজতেই কাউন্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো টিকিট শেষ। তাই অফিস থেকে নেওয়া ছুটি আর কাজে লাগলো না। আজ বাধ্য হয়ে আবার এসেছি অন্তত ১ সেপ্টেম্বরের স্পেশাল সার্ভিসের টিকিটের আশায়। লাইনতো অনেক বড়, তবু দেখা যাক পাই কি না।
রাজশাহীর ট্রেনের টিকিট প্রত্যাশী হাশেম আলী বলেন, মঙ্গলবার ঘুরে গেছি টিকিট পাইনি। আজ স্পেশাল সার্ভিসের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। দুপুর হলো তবু টিকিট এখনো হাতে পাইনি। তিস্তা এক্সপ্রেসের টিকিট প্রত্যাশী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি সকাল ১০ টায় কাউন্টারে এসে শুনলাম টিকিট নাকি শেষ। এখন ট্রেনে বাড়ি ফেরার আর কোনো উপায় থকলো না। এতো লোক টিকিট পেলাম না টিকিট গেল কই?
টিকিট কলোবাজারে বিক্রি হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কমলাপুর রেলওয়ে থানার ওসি ইয়াছিন সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। আমরা সবসময় নজর রাখছি। সুষ্ঠুভাবে টিকিট প্রদান ও সংগ্রহ চলছে কাউন্টারগুলোতে।
এ প্রসেঙ্গ জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী বলেন, বুধবার ৩১ টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের ২২ হাজার ৪৯৬ টি টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। ৩৫ শতাংশ কোটার জন্য রেখে বাকি টিকেট কাউন্টার থেকে পাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঈদের বিশেষ ট্রেনের ২ হাজার ৬০৬ টি টিকেটও কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তারপরও টিকিট প্রত্যাশীদের সংখ্যা এতোটাই বেশি যে অনেকের হাতেই আমরা টিকিট তুলে দিতে পারছি না। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে নানা কথা বলছেন।
তিনি আরো বলেন, যাত্রীসেবা বিবেচনায় টিকিট বিক্রি একদিন বাড়ানো হলেও টিকিট প্রত্যাশীর ভিড় কমছে না। যতজন লাইনে দাঁড়িয়েছে তাদের সবাইকে আমরা হয়তো টিকিট দিতে পারবো না, কারণ আমাদের সম্পদ সীমিত। আমরা সাধ্যের মধ্যে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ