নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক এখন অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে মহাসড়কের দুই পাশ নিচু ও বিভিন্ন স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার কারণে। ফলে বিশেষ করে ভারী যানবাহনকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কটির গাইবান্ধার ধাপেরহাট, পীরগঞ্জের মাদারহাট, খেদমতপুর, উজিরপুর, আংরার ব্রিজ, জামতলা কলাহাট, ফায়ার সার্ভিস, লালদীঘি, রাউতপাড়া, বড়দরগা, মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ী, আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তরে রশিদপুর, শাপলা কোল্ড স্টোরের কাছে, জায়গীরহাট, বলদী পুকুর, পায়রাবন্দসহ রংপুর মডার্ন মোড় পর্যন্ত ৫ শতাধিক স্থানে বড় বড় গর্ত আর শতাধিক স্থানে উচু হয়ে গেছে।
এছাড়া সড়কটির পূর্ব অংশে অসংখ্য স্থানের বিটুমিন গলে সড়কের পাশে জমা হয়েছে। যে কারণে দ্রুতগামী যানবাহন দুর্ঘটনায় পড়ছে। গর্তের কারণে সারিবদ্ধভাবে ধীরগতিতে যানবাহনগুলো চলছে। আর এ ক্ষতের কারণে যানবাহনগুলোকে লাফিয়ে চলতে হচ্ছে, যা চালকের জন্য যেমন ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বিলুপ্ত হয়েছে।
এছাড়া মূল মহাসড়কের দুই পাশেও বিভিন্ন স্থান নিচু হয়ে গেছে। ভরে গেছে খানাখন্দে। এর ফলে ভারী যানবাহনগুলো পরস্পরকে ওভারটেক কিংবা সাইড দেয়ার সময় অসাবধানতাবশত এক পাশের পুরো চাকা মহাসড়কের মূল পাকা থেকে পাশের নিচু স্থানে নেমে যাচ্ছে আর এতে অত্যধিক লোডসম্পন্ন যানবাহন উল্টে যাচ্ছে।
এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজধানী থেকে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ১৭ জেলায় যাত্রীবাহী বাসের ট্রিপ অর্ধেকের বেশি কমিয়ে এনেছেন পরিবহন মালিকরা। উত্তরাঞ্চলে চলমান বন্যা, অতিবৃষ্টিতে মহাসড়কে বড় গর্তের সৃষ্টি ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রংপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যেসব পরিবহনের বাস চলাচল করে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হানিফ পরিবহনের বাস।
হানিফ পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসাইন বলেন, বন্যা, অতিবৃষ্টিতে সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়া এবং এই রুটের দুইটি সেতুর নাজুক অবস্থার কারণে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে আমাদের গাড়ির ট্রিপের পরিমাণ তিনভাগের একভাগে নিয়ে এসেছি।’ তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে গত ঈদে তাদের তিন’শ থেকে সাড়ে তিন’শ বাস চলাচল করেছে, এবার একশ’র মধ্যে সীমিত রাখতে হচ্ছে।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড়দরগাহ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ হাফিজুর রহমান জানান, যে কারণেই হোক এখন মহাসড়কে যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হ্রাস পেলেও উল্টে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে।
হামিদুর, জামান, রাসেল, জয়নাল, সালেকসহ কয়েকজন বাস ও ট্রাক চালকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এখনই সড়কটির যে অবস্থা হয়েছে, তাতে আগামী ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি আরো বেড়ে যাবে।
দৈনিক দেশজনতা /এমএইচ