নিজস্ব প্রতিবেদক:
মানিকগঞ্জের ৭৫ ভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। বির্স্তীণ জমিতে মাঠের পর মাঠ পাটের আবাদ হতো এক সময়। আবহাওয়া প্রতিকূল ও মাটি ভালো হওয়ায় এ জেলার পাটের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। প্রকৃতির বিমুখতা আর ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন চাষিরা। তবে জেলায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।
জেলার সাতটি উপজেলার চাষিরা এখন পাটের আঁশ ছাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বর্ষা ও বৃষ্টির পানি খালেবিলে থাকায় চাষিদের আর আঁশ পচাতে (জাগ) বাড়তি খরচ গুনতে হয়নি। বিগত বছরগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়নি। গত বছরের চেয়ে এবার পাটের মূল্য বেশি পাবে এমটাই আশা করছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে প্রত্যেক উপজেলায়। গতবছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবার পাট চাষে ঝুঁকেছিলেন চাষিরা। ফলনও ভালো হয়েছে। আঁশ ছাড়াতে কোনো ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না তাদের। জমি থেকে পাট কর্তন করার পর পাশের ডোবা বা খালে আঁশ পচানো (জাগ) কিংবা ছাড়ানোর ব্যবস্থা থাকায় খুশি চাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতটি উপজেলায় এ বছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫,০০০ হেক্টর জমিতে কিন্তু আবাদ হয়েছে ৫,২০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর ৪,৮০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছিল। আবহাওয়া অনুকূল ও ভালো মাটি হওয়ায় দেশি ও তুশ জাতের পাট বেশি আবাদ হয়েছে। আব্দুর মান্নান নামের এক চাষি জানান, এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে, দামটা ভালো হলেই আরো ভালো হয়। তবে এ বছর শ্রমিকের মজুরি আগের বছরের তুলনায় একটু বেশি। একই এলাকার আরেক চাষি হাসান বলেন, গত বছর পাটের তেমন লাভ করতে পারি নাই। এবার আশা করছি গত বছরেরটাসহ পুষিয়ে নিতে পারবো। মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলিমুজ্জামান মিয়া জানান, চলিত বছর জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে ছিল। এজন্য খুব ভালো ফলন হয়েছে। প্রবহমান পানিতে জাগ দেওয়া পাটের আঁশ খুব ভালো হয়। তাই দামও বেশি থাকে। বদ্ধ জলাশয়ে জাগ দেওয়া পাটের আঁশ কিছুটা কালো হয়। তাই দাম একটু কম। তবে এবার সেই আশঙ্কা একেবারেই নেই।
যদি কোনো বিপর্যয় না আসে তবে চাষিরা পাটের দাম ভালো পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দৈনিক দেশজনতা/এন এইচ