উখিয়ায় অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা অপ্রতিরোধ্য!

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

সরকারী ভাবে নিষিদ্ধ হুন্ডি ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজরের উখিয়ায়। পুলিশ প্রশাসনের সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে শক্তিশালী সিন্ডিকেট সদস্যরা প্রতিদিন হুন্ডির মাধ্যমে আসা লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ ভাবে বিতরণ করছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমান বৈদেশিক আয় বা রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি লন্ডারিং ও হুন্ডির মাধ্যমে আসা অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধ করতে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এমনকি হুন্ডির লেনদেন কে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় হুন্ডির মাধ্যমে আসা টাকা লেনদেনকারী বা হুন্ডির ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান সহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিধান চালু করে। নির্ভরযোগ্য তথ্যে প্রকাশ দেশের প্রতিটি উপজেলায় হুন্ডি ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট সদস্যদের নাম ঠিকানা তালিকা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করার জন্য থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উখিয়া থানার পুলিশ জানান, আমরা চেষ্টা করছি অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ করতে। কিন্তু টাকা সহ হাতে নাতে না পেলে কাউকে গ্রেফতার করা কঠিন। এদিকে বাংলাদেশ মায়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চল উখিয়ায় হুন্ডি ব্যবসা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রভাবশালী হুন্ডি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া ভাবে হুন্ডির টাকা বিতরণ করে যাচ্ছে। অভিযোগে প্রকাশ জালিয়া পালং ইউনিয়নর নিদানিয়া গ্রামের মোহাম্মদ হাসেমের পুুত্র তাহের দক্ষিণ কক্সবাজরের উখিয়া ও টেকনাফ অবৈধ হুন্ডির চালানি টাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। হুন্ডির স¤্রাট তাহেরের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। কোটবাজার হাকিম ট্রেড সেন্টারে ফ্যামেলি ক্লথ ষ্টোর হচ্ছে হুন্ডির চালনি টাকার আস্তানা। ওই দোকানের মালিক আব্দুল্লাহ হচ্ছে হুন্ডি সম্রাট তাহেরের মামা। মামা-ভাগিনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ মায়ানমারে অবৈধ ভাবে হুন্ডির টাকা বিতরণ করে আসছে। এমন কি মধ্যে প্রাচ্য থেকে আসা হুন্ডির টাকা রোহিঙ্গা বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠন আর.এস.ও নেতা দেরকে ও টাকা সরবরাহ করে থাকে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও উখিয়া হাজী পাড়া গ্রামের ইয়াবা মাহমুদুল হক, তেলী পাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম, মরিচ্যার কপিল, করই বনিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম প্রকাশ-ঠান্ডু, গুয়ালিয়ার আব্দু, জালিয়াপালং পাইন্যাশিয়া গ্রামের হেলালের নেতৃত্বে উখিয়ায় ২০/২৫ সদস্যের বিশাল একটি হুন্ডি টাকা বিতরণের সিন্ডিকেট রয়েছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উখিয়ার প্রায় শত শত লোক সৌদি আরব, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে। বিদেশে অবস্থানরত এসব প্রবাসীরা তাদের উপার্জিত টাকা ব্যাংকিং লেনদেনের পরিবর্তে বেশী ভাগ অবৈধ ভাবে হুন্ডির চ্যানেলে পাঠানো হয়। হুন্ডি ব্যবসার তাহের, আব্দুল্লাহ, মাহমুদুল হক, আব্দুর রহিম ও হেলালের নেতৃত্বে পরিচালিত সিন্ডিকেট পুরো হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। প্রতিদিন এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ১০ লক্ষ টাকার অধিক হুন্ডির টাকা বিতরণ করা হয়। শুধু তাই নয় ভয়াবহ ইয়াবা ব্যবসার টাকাও হুন্ডির মাধ্যমে বিতরণ করছে এ সিন্ডিকেট। তৎ মধ্যে মাহমুদুল হক ইয়াবা ব্যবসায়ও জড়িত বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কোটবাজার হাকিম ট্রেড সেন্টারে আব্দুল্লাহর একটি ফ্যামিলি ক্লথ ষ্টোর -নামক দোকান রয়েছে। হুন্ডির গডফাদার তাহের পুরো হুন্ডি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে বলে সূত্রে প্রকাশ। থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এ ধরনের অবৈধ কাজ কারবার করে যাচ্ছে। সচেতন মহলের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার আয় বৃদ্ধি বা রেমিট্যান্স আদায়ের অবৈধ হুন্ডি ব্যবসা বন্ধ সহ জড়িত অবৈধ ব্যবসায়ীদের কে নজর দারী সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পাশা-পাশি পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ অভিযান জরুরী হয়ে পড়েছে।

দৈনিক দেশজনতা/এন আর