নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুরের সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় জীবিত কাউকে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার অপারেশন ‘সান ডেভিল’ শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী ক্ষুদেবার্তায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
সুমিত চৌধুরী বলেছেন, জঙ্গি আস্তানায় চারটি ঘর আছে। তবে সেখানে জীবিত অবস্থায় কেউ নেই। যদিও আস্তানার ভেতরে কোনো মরদেহ কিংবা বিস্ফোরকদ্রব্য আছে কি না সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানাননি।
এর আগে সকাল পৌনে নয়টার দিকে অপারেশসন ‘সান ডেভিল’ শুরু হয়। অভিযান শুরুর তিন মিনিট পরই কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত আর কোনো গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।
জঙ্গি আস্তানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ শাখার বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে। ১২ সদস্যের বোমা বিশেষজ্ঞ এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিএমপির একজন উপ-কমিশনার।
বৃহস্পতিবার বাড়ির ভেতরে অভিযান চালানোর জন্য এই বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের জন্যই অপেক্ষা করা হচ্ছিল। তবে তারা আসতে দেরি করায় ওই রাতে অভিযান স্থগিত করা হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়- শুক্রবার সকালে বাড়ির ভেতরে অভিযান চালানো হবে। এই অভিযানের নাম হবে- ‘অপারেশন সান ডেভিল’। শুক্রবার সকালে এই অভিযান শুরু হয়।
এদিকে জঙ্গি আস্তানার পাশে কেটে নেওয়া ধানখেতে এখনও পড়ে গতকাল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মহুতি দেয়া পাঁচ জঙ্গির মরদেহ। আজ সেগুলো উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জঙ্গি আস্তানার চারপাশে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাড়িটির আশপাশে অবস্থান নিয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোররাতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে মাটিকাটা ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের সাজ্জাদ আলীর বাড়িটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। এরপর ভেতরের সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু জঙ্গিরা এতে সাড়া না দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পরে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাঁচ জঙ্গি আত্মহুতি দেন। এ সময় জঙ্গিদের বল্লমের আঘাতে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী নিহত হন। আহত হন পুলিশের দুই সদস্য।
তবে পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সুমাইয়া নামে এক নারী আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে জঙ্গি আস্তানার পাশ থেকে সুমাইয়ার দুই শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জঙ্গিদের মধ্যে সুমাইয়ার বাবা, মা, ছোট ভাই ও বোন রয়েছে।
M/H